এবছর (১৪৪৫ হিজরী) এর সর্বনিম্ন ফিতরা ১০০/=, সর্বোচ্চ ৩,৫৬০/= টাকা।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর স্থলে বিসমিহি তাআলা লেখা কি বৈধ?

ফতওয়া কোডঃ 176-আআ-12-02-1444

প্রশ্নঃ

কওমী আলেমরা তাদের বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন এবং বিভিন্ন জায়গায় শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর স্থলে বিসমিহি তাআলা লিখতেছেন। প্রথম বাক্যটির অর্থ হলোঃ আমি আল্লাহর নামে শুরু করছি যিনি পরম দাতা ও দয়ালু। আর ২য় বাক্যের অর্থ হলোঃ তার নামের সাথে শুরু করছি যিনি মহান। আরবি গ্রামার অনুযায়ী যিনি মহান বলতে যে কারোর দিকে ইংগিত করা যায়। সুতরাং সেটা কি করে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম এর বিকল্প হতে পারে?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

চিঠি-পত্ৰ ও গুরুত্ত্বপুৰ্ন লিখনীর শুরুতে পুরো বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখা সুন্নত, আল্লাহর রসুল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আমল দ্ধারা এটি প্ৰমানিত, পবিত্র কুরআন শরীফে হযরত সুলাইমান আঃ এর চিঠির আলোচনা এসেছে, যাতে বিসমিল্লাহ দ্ধারা শুরু করার কথা উল্লেখ আছে।

সহীহ হাদীসে এসেছে, হযরত মিস‌ওয়ার ইবনে মাখরাসা রা. ও হযরত মারওয়ান ইবনে হাকাম রা. থেকে বৰ্নিতঃ হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় হযরত রসুল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সন্ধিপত্ৰের শুরুতে মুশরিকদের মুখপাত্ৰ সুহাইল ইবনে আমর আপত্তি করে বললোঃ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম কি? আমরা তা জানিনা, আরবের প্ৰথা অনুযায়ী বিসমীকাল্লাহুম্মা লেখো। তদূত্তরে সাহাবায়ে কিরাম রা. বললেনঃ আল্লাহর শপথ আমরা বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম ছাড়া সন্ধিপত্ৰ লিখবোনা। উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় শরহুল মুসলিমে বৰ্নিত আছে যে, পরবৰ্তিতে আল্লাহর রসুল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর পরিবৰ্তে অন্য কিছু লিখেন।

সুতরাং চিঠি পত্ৰ ও গুরুত্ত্বপুৰ্ন লিখনীর শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখা সুন্নত, এবং এর পরিবৰ্তে অন্য কোন শব্দ লিখলে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখার সুন্নত আদায় হবেনা, বিসমিল্লাহ এর সাওয়াবও পাওয়া যাবেনা। আর বিসমিহি তাআলা লিখলে আল্লাহর নামে শুরু করার ফজিলত তো পাওয়া যাবে, কিন্তু বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখার সুন্নাত আদায় হবেনা।

প্ৰকাশ থাকে যে, লিফলেট-পোষ্টার, প্ৰচারপত্ৰ-ব্যানার এ ধরনের কাগজ যেগুলো সাধারনতো সংরক্ষন করা হয়না, সেসব কাগজে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লিখবেনা বরং আরম্ভ করার সময় মুখে বিসমিল্লাহ পাঠ করে নিলেই চলবে বা বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর পরিবৰ্তে বিসমিহি তাআলা লেখা যাবে।

কেননা যেকোন ভাবে যদি বিসমিল্লাহ লেখার পর এ আয়াতের সাথে বেআদবী হওয়ার সম্ভানা থাকে, তাহলে এমন স্থলে বিসমিল্লাহ লেখা জয়েয নেই। বরং যে কাগজগুলো সাধারনতো সংরক্ষন করা হয় না তাতে কোন ভাবেই বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখা যাবে না, তার পরিবৰ্তে এমন কিছু লিখবে যাতে পাঠকবৰ্গ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর প্ৰতি ইংগিত বুঝতে পারে, আর এ জন্যই কওমী আলেমরা তাদের বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন এবং বিভিন্ন জায়গায় শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর স্থলে বিসমিহি তাআলা লিখছেন।

আরবি গ্রামার অনুযায়ী বিসমিহীর হা দ্বারা একমাত্র আল্লাহ তাআলাই উদ্দেশ্য, কেননা এর পর তাআলা শব্দ স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, আর উক্ত শব্দ একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্যই পবিত্র কুরআনে কারীমে ব্যবহার হয়েছে।

সুত্রসমূহ

سورة النمل: 30  اِنَّهٗ مِنۡ سُلَیۡمٰنَ وَ اِنَّهٗ بِسۡمِ اللّٰهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ

سورة الۡمُؤۡمِنُوۡنَ: 16 فَتَعٰلَی اللّٰهُ الۡمَلِکُ الۡحَقُّ ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۚ رَبُّ الۡعَرۡشِ الۡکَرِیۡمِ

صحيح المسلم: 4736 كتاب الجهاد و السيار. باب الصلح الحديبية

شرح المسلم للنبوي: 3337 كتاب الجهاد و السيار. باب الصلح الحديبية

صحيح المسلم: 13/15

الدر المختار: 4/130

فتاوى الهندية: 5/323

فتاوى محمودية: 5/535

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

Scroll to Top