প্রশ্নঃ দ্বীনি কাজের জন্য জমানো টাকা হারিয়ে গেলে তার বিধান কি? ক্ষতিপূরণ দিতে হবে কিনা?
উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم
প্রশ্নে বর্ণনামতে যদি উক্ত জমানো টাকার মধ্যে মান্নতের নিয়ত না করা থাকে, অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর না পাওয়া যায়, তাহলে উক্ত হারিয়ে যাওয়া টাকায় দান সদকার নিয়ত করবে এবং কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না।
প্রশ্নঃ নামাজের মধ্যে মুক্তাদী ব্যক্তির ইমামের আগে নামাজের কোন রুকন আদায় করার ব্যাখ্যা কি?
উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم
নামাজে ইমাম সাহেবের আগে মুক্তাদি ব্যক্তির রুকু-সিজদাসহ যেকোনো রুকনে (নামাজের পুরো একটি স্তম্ভ) চলে যাওয়া অবৈধ। এ অবস্থায় ইমাম সাহেব যদি মুক্তাদী ব্যক্তিকে ওই রুকনে পায়, তাহলে নামাজ আদায় হয়ে গেলেও ওই মুক্তাদি ব্যক্তি গুনাহগার হবে। আর ইমাম সাহেব যদি তাকে ওই রুকনে না পায়, তাহলে ওই মুক্তাদি ব্যক্তির নামাজ ভেঙে যাবে।
মুআজ্জিন সাহেব ইকামতের সময় হাঁটাচলা করেন, এক কাতার থেকে অন্য কাতারে যান, মুআজ্জিন সাহেবের ইকামতের উক্ত পদ্ধতি সঠিক কিনা, তাকে পুনরায় ইকামত দিতে হবে কিনা?
সমাধানঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
মুআজ্জিন সাহেব উক্ত কাজ ঠিক করেননি, ইকামতের সময় এমন কাজ করা অনুত্তম, তবে এক্ষেত্রে পুনরায় ইকামত দেওয়ার প্রয়োজন নেই ইকামত আদায় হয়ে গেছে।
১. আমাদের এক মুসল্লী ভাই স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন, কিন্তু নামাজের সময় হাঁটু ভাজ করতে পারেন না, আসলেই সে হাটু ভাজ করতে অপারগ, এক্ষেত্রে সে কিভাবে নামাজ আদায় করবে?
২. হাঁটুতে প্রচন্ড ব্যথা হওয়ার কারণে সিজদায় যাওয়া এবং সিজদা থেকে ওঠা খুবই কষ্টকর, এক্ষেত্রে আমি চেয়ারে বসে নামাজ পড়তে পারব?
৩. কিছু সমস্যার কারনে আমি জমিনে বসতে অপারগ, তাহলে আমি নামাজ কিভাবে আদায় করব?
৪. সিজদা করতে অক্ষম ব্যক্তি চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করতে পারবেন?
সমাধানঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
১. সত্যিই যদি উক্ত মুসল্লী হাটু ভাজ করতে অপারগ হয়, তাহলে বসতে পারলে বসে ইশারায় নামাজ আদায় করবে, অন্যথায় চেয়ারে বসে ইশারায় নামাজ আদায় করার অনুমতি আছে।
২. জমিনে বসে ইশারায় নামাজ পড়বেন, তবুও যদি সমস্যা হয় তাহলে চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার অনুমতি রয়েছে, তবে জমিতে বসে পড়াই উত্তম।
৩. সত্যই যদি আপনি শরীয়ত সম্মত সমস্যার কারণে জমিনে বসতে অপারগ হন, তাহলে চেয়ারে বসে ইশারায় নামাজ আদায় করবেন, তবে রুকুতে যতটুকু মাথা ঝুকাবেন সিজদার সময় ইশারার মধ্যে রুকুর চাইতে বেশি মাথা ঝুকাতে হবে।
৪. জমিনে বসে নামাজ পড়াই উত্তম হবে, তবে অনুত্তম হলেও চেয়ারে বসতে পারবে, চেয়ারে বসে নামাজ পড়লে ইশারায় রুকু সিজদা করবে, সেজদা করতে অক্ষম ব্যক্তির কিয়াম রহিত হয়ে যায়, তাই চেয়ারে বসে ইশারায় নামাজ পড়া অবস্থায় দাঁড়াতেও পারবে।
সমাজ এর প্রচলন আছে, নারীদের নাক-কান ছিদ্র করে বিভিন্ন অলংকার লাগানো হয়, সাধারণত ধারালো ছুরি দিয়ে ফোটা করা হয়, এতে প্রকাশ্যে তাদের ওপর জুলুম করা হয় বলে মনে হয়, শরীয়ত এ ব্যাপারে কি বলে?
সমাধানঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
নারীদের সাজ-সজ্জা করার জন্য নাক-কান ছিদ্র করা হারাম নয় বরং শরীয়ত সম্মত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় কান ছিদ্র করা হতো, এ কাজ থেকে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো নিষেধ করেননি, উলামায়ে কেরাম এই কান ছিদ্র করার উপর ইজতেহাদ করে নাক ছিদ্র করাকেও জায়েজ বলেছেন।
দান-সদকার ক্ষেত্রে রাস্তার ভিক্ষুক-ফকিরদের অন্য দ্বীনদার ফকিরদের চেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া কেমন?
সমাধানঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
দান-সদকা করার সওয়াব এর কাজ, ইখলাসের সাথে দান-সদকা করা অতি জরুরী। তবে সুস্থ-সবল সম্পদ সঞ্চয়কারী ফকিরদের দান করা থেকে বিরত থাকা উচিত এবং দানের ব্যাপারে দ্বিনদার ফকিরদের অগ্রাধিকার দেওয়া উত্তম।
আমাদের একটি সংস্থা বা সংগঠনের ফান্ড আছে, সংগঠনের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ, ফান্ডে কিছু টাকা বেঁচে আছে, এখন এই টাকার হুকুম কি?
সমাধানঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
উক্ত সংস্থা বা সংগঠনের ফান্ডে বেঁচে যাওয়া টাকা সমূহের মালিকরা/সদস্যগণ যদি উক্ত টাকার ওপর মালিকানা ছেড়ে দিয়ে থাকেন বা ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বশীলকে খরচের অনুমতি প্রদান করে থাকেন, তাহলে সেটা দান করাসহ যেকোন কাজে খরচ করা বৈধ হবে। অন্যথায় মালিকদের মালিকানা টাকা হিসেবে উক্ত টাকা মালিকদের নির্দেশনা মোতাবেক খরচ করতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনে ভ্রু প্লাক করার শরীয়ত সম্মত বিধান কি?
সমাধানঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রচলিত ফ্যাশন অনুযায়ী ভ্রু প্লাক করা শরীয়ত সম্মত নয়, তবে ভ্রু বড় হয়ে গেলে বা এলোমলো হলে স্বাভাবিক করার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী কাটার অনুমতি আছে, বিনা প্রয়োজনে ভ্রু প্লাক করা জায়েজ নেই।