কুরবানীর পশুর চামড়া বিক্রি করলে মূল্য সদকা করে দেওয়ার নিয়তে বিক্রি করবেন। সদকার নিয়ত না করে নিজের খরচের নিয়ত করা নাজায়েয ও গুনাহ। নিয়ত যা-ই হোক বিক্রিলব্ধ অর্থ পুরোটাই সদকা করে দেওয়া জরুরি।
প্রশ্নঃ মুসাফির কুরবানীর শেষ সময়ে মুকীম হলে করনীয় কি?
উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم
কুরবানীর সময়ের প্রথম দিনে মুসাফির থাকার পরে ৩য় দিন কুরবানীর সময় শেষ হওয়ার পূর্বে মুকীম হয়ে গেলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। পক্ষান্তরে প্রথম দিনে মুকীম ছিল অতপর তৃতীয় দিনে মুসাফির হয়ে গেছে তাহলেও তার উপর কুরবানী ওয়াজিব থাকবে না। অর্থাৎ সে কুরবানী না দিলে গুনাহগার হবে না।
প্রশ্নঃ কুরবানীর গোশত দিয়ে খানা শুরু করা সুুুুন্নত!?
উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم
ঈদুল আযহার দিন সর্বপ্রথম নিজ কুরবানীর গোশত দিয়ে খানা শুরু করা সুন্নত। অর্থাৎ সকাল থেকে কিছু না খেয়ে প্রথমে কুরবানীর গোশত খাওয়া সুন্নত। এই সুন্নত শুধু ১০ যিলহজ্বের জন্য। ১১ বা ১২ তারিখের গোশত দিয়ে খানা শুরু করা সুন্নত নয়।
কুরবানীর মৌসুমে অনেক মহাজন কুরবানীর হাড় ক্রয় করে থাকে। টোকাইরা বাড়ি বাড়ি থেকে হাড় সংগ্রহ করে তাদের কাছে বিক্রি করে। এদের ক্রয়-বিক্রয় জায়েয। এতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু কোনো কুরবানীদাতার জন্য নিজ কুরবানীর কোনো কিছু এমনকি হাড়ও বিক্রি করা জায়েয হবে না। করলে মূল্য সদকা করে দিতে হবে। আর জেনে শুনে মহাজনদের জন্য এদের কাছ থেকে ক্রয় করাও বৈধ হবে না।
১০ ও ১১ তারিখ দিবাগত রাতে কুরবানী করা জায়েয। তবে রাতে আলোস্বল্পতার দরুণ জবাইয়ে ত্রুটি হতে পারে বিধায় রাতে জবাই করা অনুত্তম। অবশ্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকলে রাতে জবাই করতে কোনো অসুবিধা নেই।
প্রশ্নঃ কাজের লোককে কুরবানীর গোশত খাওয়ানো জায়েয?
উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم
কুরবানীর পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া জায়েয নয়। গোশতও পারিশ্রমিক হিসেবে কাজের লোককে দেওয়া যাবে না। অবশ্য এ সময় ঘরের অন্যান্য সদস্যদের মতো কাজের লোকদেরকেও গোশত খাওয়ানো যাবে।
আমাদের সমাজে একটি নিয়ম আছে যে, কুরবানী দাতা নিজ কুরবানীর গোশত তিন ভাগে বিভক্ত করে থাকেন, একভাগ নিজের জন্য, দ্বিতীয় ভাগ গরীব-দুঃখীদের জন্য এবং তৃতীয় ভাগ সমাজ কর্তৃক বাধ্যতামূলক নিয়ে যাওয়া হয়, এবং সমাজের সকল কুরবানীদাতার তৃতীয় ভাগের গোশত একত্র করে সর্বসাধারণের মাঝে বন্টন করা হয়৷
১ম প্রশ্নঃ উল্লেখিত নিয়মে সমাজে প্রচলিত কুরবানীর গোশতের সমাজভিত্তিক বন্টন পদ্ধতি কুরবানীদাতা সহ সর্বসাধারণের মাঝে ভাগ করা শরীয়ত সম্মত কিনা?
২য় প্রশ্নঃ আমার কুরবানীর গোশত সমাজে যারা কোরবানি দিয়েছে এবং যারা কোরবানি দেয় নাই, তাদের সকলের মাঝে সমাজ প্রচলিত নিয়মের বন্টন পদ্ধতিতে বন্টন করে দিতে পারব কিনা? এবং একই নিয়মে অন্য যারা কোরবানীর গোশত দিতে চায়, তাদের গোশত আমি নিতে পারব কিনা?
৩য় প্রশ্নঃ সকল কুরবানী দাতার গোশত সমাজ ভিত্তিক নিয়মে একত্র করে সর্বসাধারণের মাঝে ভাগ করার কোন শরীয়ত সম্মত নিয়ম আছে কিনা?
সমাধানঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরবানীর গোশতের ব্যাপারে কুরবানি দাতার পূর্ণ এখতিয়ার রয়েছে যে, সে চাইলে পুরোটা নিজের জন্য রেখে দিতে পারে, বা যাকে যতোটুকু ইচ্ছে দিতে পারে৷ তিন ভাগের বিষয়টি ঐচ্ছিক এবং মুস্তাহাব মাত্র৷ সামাজিক ভাবে চাপ সৃষ্টি করে গোশত জমা করা, বা লজ্জায় পড়ে গোশত দেয়ার মতো প্রথা শরীয়ত সমর্থিত নয়৷ উপরন্ত অনেকের মান্নতের কোরবানি হয়ে থাকে, যার গোশত নিজে বা ধনী ব্যক্তি খেতে পারে না, বিধায় প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী সামাজিক ওই প্রথাটি অবশ্যই বর্জনীয় বলে বিবেচিত হবে৷