Darul Ifta, Rahmania Madrasah Sirajganj

Darul Ifta, Rahmania Madrasah Sirajganj, Bangladesh.

নামাযে কুরআনে কারিম দেখে পড়া জায়েয নয়, গরমেও রোজা রাখতেই হবে; মিজানুর রহমান আজহারীর উক্ত ফতওয়া শুধুই গোমরাহী!

ফতওয়া কোডঃ 12-স,সা-14-08-1442

প্রশ্নঃ

মুহতারাম, হযরত মুফতি সাহেব হুজুর, আমার প্রশ্ন হলো যে,

১. আমরা লক্ষ করছি মিজানুর রহমান আজহারী যেই ফতওয়া দিচ্ছেন যে, তারাবিহের সালাতে কুরআন হাতে নিয়ে দেখে পড়া জায়েজ আছে। তাই আমি আপনার কাছে জানতে চাই তার ফতওয়া কতোটুকু ইসলামি শরিয়াত সাপোর্ট করে?

২. তিনি গতকাল ০১/০৫/২০২০ইং তে আবারও লাইভে এসে একটি নতুন ফতওয়া দিলেন যে, রিকশা ওয়ালারা রমজানের সিয়াম এই গরম কালে না রাখে তারা শীতের দিনে রাখবে, চাইলে তারা গরমের দিনে সিয়াম ছেড়ে দিতে পারবে, জায়েজ আছে। তাই হুজুরের নিকট আমার আকুল আবেদন এই যে দুটি ফতওয়া তা শরিয়তের ভাষায় কতটুকো ঠিক তা জানালে উপকৃত হবো।

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

১. মিজানুর রহমান আজহারী মুফতি নন, তার এই ফতওয়া শুধুই গোমরাহী। ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নতসহ সকল নামাযে পবিত্র কুরআনে কারিম দেখে পড়া জায়েয নয়, দেখে পড়লে নামাজ হবে না, আর নামাজে কুরআনের পৃষ্ঠা উল্টালে আমালে কাছিরা হওয়ার কারনে নামাজ হবে না।

২. যারা রিক্সাওয়ালা বা মজদুরীর কঠিন কাজ করে, তাদের উচিত হবে পবিত্র মাহে রমাযানে তারা বিরতি দিয়ে দিয়ে কাজ করবে, কাজের ফাকে একটু আরাম করে নিবে, কারো অধিনস্ত হলে মালিক কর্মচারিকে আরামের সুযোগ দিবে, যদি মালিক এ সুযোগ না দেয় তবুও রোজা রাখতে হবে, মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর গরমের অযুহাতে রোজা ভেঙ্গে শীতকালে রোজা রাখার কথা বলা শরীয়তের ফরজ বিধানের সাথে তামাশার নমান্তর ও গোমরাহী।

তবে পরিস্থিতি যদি এমন হয় যে, পিপাসার কারনে মৃত্য হয়ে যাবে, তাহলে রোজা ভাঙ্গা যাবে, এবং পরে কাজা করে নিতে হবে।

সুত্রসমূহ

الدر المختار: 2/383-384 لا يجوز أن يعمل عملاً يصل به إلى الضعف، فيخبز نصف النهار ويستريح الباقي، فإن قال: لا يكفيني، كذب بأقصر أيام الشتاء، فإن أجهد الحر نفسه بالعمل حتى مرض فأفطر ففي كفارته قولان، قنية

فتاوی شامی: 2/420 ”(قوله: لا يجوز إلخ) عزاه في البحر إلى القنية. وقال في التا تارخانية: وفي الفتاوى سئل علي بن أحمد عن المحترف إذا كان يعلم أنه لو اشتغل بحرفته يلحقه مرض يبيح الفطر، وهو محتاج للنفقة هل يباح له الأكل قبل أن يمرض؟ فمنع من ذلك أشد المنع، وهكذا حكاه عن أستاذه الوبري، وفيها: سألت أبا حامد عن خباز يضعف في آخر النهار هل له أن يعمل هذا العمل؟ قال: لا ولكن يخبز نصف النهار ويستريح في الباقي، فإن قال: لا يكفيه، كذب بأيام الشتاء؛ فإنها أقصر فما يفعله اليوم اهـ ملخصاً.

(قوله: فإن أجهد الحر إلخ) قال في الوهبانية: فإن أجهد الإنسان بالشغل نفسه فأفطر في التكفير قولين سطروا، قال الشرنبلالي: صورته: صائم أتعب نفسه في عمل حتى أجهده العطش فأفطر لزمته الكفارة، وقيل: لا، وبه أفتى البقالي”۔ (২/ ৪২০، کتاب الصوم، ط: سعید)

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 415 জন।

সহবাসের পর বিছানায় নাপাক থাকলে বিছানা পাক করার পদ্ধতি কি?

ফতওয়া কোডঃ 11-প-09-08-1442

প্রশ্নঃ

স্ত্রী সহবাসের পর বিছানায় যদি নাপাক লাগে তাহলে ঐ বিছানা পবিত্র করার নিয়ম কি? এবং ঐ বিছানায় নামাজ পড়ার বিধান কি?

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

স্ত্রী সহবাসের পর যদি বিছানায় স্বামী-স্ত্রীর বীর্য পড়ে তা শুকিয়ে যায়, তাহলে তা খুটিয়ে তুলে ফেললেই তা পাক হয়ে যায়। তবে যদি কেউ সে শুকিয়ে যাওয়া না পাক খুটিয়ে তুলে না ফেলে তার উপর পবিত্র জায়নামায বা অন্য কোন পবিত্র কাপড় বিছিয়ে নামায আদায় করে, তা হলে তার নামায সহীহ হবে। এতে কোন সমস্যা নেই।

সুত্রসমূহ

فتاوی عالمگیری: 1/58

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 573 জন।

যে ঘরে পশু-পাখি ও জীব-জন্তুর ছবি থাকে, সে ঘরে নামাজ পরলে নামাজ হবে কি?

ফতওয়া কোডঃ 10-সা,হাহা-09-08-1442

প্রশ্নঃ

আসসালামুআলাইকুম, হুজুর আমার প্রশ্ন হলো, যে ঘরে পশু-পাখি ও জীব-জন্তুর ছবি থাকে, সে ঘরে নামাজ পরলে নামাজ হবে কি?

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

ঘরে প্রাণীর ছবি, কার্টুন, প্রতিকৃতি, মূর্তি ইত্যাদি সংরক্ষণ করা হারাম। যে ঘরে এসব থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। এ মর্মে একাধিক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন: আবু তালহা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ، وَلَا صُورَةٌ “ফেরেশতাগণ ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর অথবা ছবি থাকে। হযরত ইবনে ‘আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রী মাইমূনাহ রা. আমার নিকট বর্ণনা করেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: জিবরাঈল আলাহিস সালাম আমার সাথে রাতে সাক্ষাত করার ওয়াদা করেছিলেন কিন্তু সাক্ষাত করেননি। অতঃপর তাঁর মনে পড়লো যে, আমাদের খাটের নীচে একটি কুকুর ছানা আছে। তিনি এটাকে বের করে দিতে আদেশ দিলে তা বের করা হলো। অতঃপর তিনি নিজেই পানি দিয়ে সে স্থানটা ধুয়ে ফেলেন। এরপর জিবরাঈল আ. তাঁর সাথে সাক্ষাতের সময় বললেন: “যে ঘরে কুকুর এবং ছবি থাকে সে ঘরে আমরা কখনো প্রবেশ করি না।” সকাল বেলা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুকুর মারতে আদেশ দিলেন। এমনকি ছোট বাগান পাহারার কুকুর হত্যা করারও আদেশ দেন, বড় বাগানের পাহারাদার কুকুর ছাড়া। তিনি আরও বলেছেন: أَنْ لاَ تَدَعَ قَبْرًا مُشْرِفًا إِلاَّ سَوَّيْتَهُ وَلاَ تِمْثَالاً إِلاَّ طَمَسْتَهُ ‏ “কোন উঁচু কবরকে (মাটি) সমান করা ব্যতীত ছাড়বে না, আর কোন প্রতিকৃতি বিধ্বংস করা ব্যতীত ছাড়বে না।” সহিহ মুসলিমের অন্য বর্ণনায় রয়েছে: وَلاَ صُورَةً إِلاَّ طَمَسْتَهَا ”আর কোনো ছবি পেলে তা মুছে দিবে।” এ মর্মে বহু হাদিস বিদ্যমান রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, মুহাদ্দিসগণ বলেন: উল্লেখিত হাদিসগুলোতে যে সকল ফেরেশতা প্রবেশ করবে না বলা হয়েছে সেগুলো দ্বারা উদ্দেশ্য হল, রহমত ও বরকতের ফেরেশতাগণ। অর্থাৎ কোনো ঘরে প্রাণীর ছবি, মূর্তি, প্রতিকৃতি ও কুকুর থাকলে ঐ সকল প্রবেশরতাগণ তাতে প্রবেশ করে না যারা রহমত ও বরকত নিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে আগমন করে থাকেন। কিন্তু বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতাগণ তাদের দায়িত্ব পালনার্থে অবশ্যই প্রবেশ করে- ঘরে যতই ছবি, মূর্তি ও কুকুর থাকুক না কেন। যেমন: প্রাণ সংহারের দায়িত্বে নিয়োজিত মালাকুল মওত বা মৃত্যু দূত, তাঁর সঙ্গে আগত ফেরেশত মন্ডলী, মানুষের কার্যবিবরণী লেখার দায়িত্ব প্রাপ্ত কিরামান কাতিবীন বা সম্মানিত লেখক ফেরেশতাবৃন্দ ইত্যাদি।

মোটকথা, এ সকল ছবিকে ঘর থেকে সরানো জরুরি অথবা আসবাব-পত্রে যে সকল প্রাণীর ছবি বা প্রাণীর কার্টুনের ছবি আছে কমপক্ষে সেগুলোর মুখমন্ড কালি দিয়ে বা যে কোনভাবে মুছে দেয়া জরুরি। মুখ মন্ডল তথা চোখ, মুখ, নাক, কান ইত্যাদি মুখাবয়বের চিহ্ন অবশিষ্ট না থাকলে তার উপর ছবির বিধান প্রযোজ্য হবে না। সম্ভব হলে ছবি-কার্টুন ও প্রতিকৃতি মুক্ত ঘরে সালাত আদায় করা উত্তম। কিন্তু এ সব প্রাণীর ছবি, কার্টুন ইত্যাদি থাকা স্বত্বেও যদি সালাতের সঠিক নিয়ম-পদ্ধতি অনুসরণ করে সালাত আদায় করা হয় তাহলে তা সহিহ হবে ইনশাআল্লাহ। তবে যথাসম্ভব এমনটি করা উচিৎ নয়।

সুত্রসমূহ

سنن النسائي: 5347

سنن ابی داؤد: 4157

صحیح المسلم: 969

سنن الترمذی: 1049

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 713 জন।

ব্যবসার জন্য ফেসবুকে ছবি ব্যবহার করা কেমন?

ফতওয়া কোডঃ 09-অ,ব্যাবা,হাহা-09-08-1442

প্রশ্নঃ

আমি ব্যবসার জন্য ফেসবুক ব্যাবহার করি, কিন্তু আমার ফেসবুক প্রোফাইলে কোন ছবি নাই, যার কারণে আমাকে কেউ চিনতে পারে না, আমার প্রশ্ন হচ্ছে ব্যবসার জন্য ফেসবুকে আমার ছবি ব্যবহার করতে পারব কিনা?

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

শরিয়তের দৃষ্টিতে ছবি উঠা না জায়েয ও হারাম। কেবলমাত্র একান্ত অপারগতার ক্ষেত্রে ছবি উঠার অবকাশ আছে। ফেসবুকে ব্যাবসা যেহেতু একান্তই অপারগতা নয়, তাই ফেসবুকে ব্যাবসার উদ্দেশ্যে ছবি উঠা ও তা ব্যবহার করা জায়েয হবে না। কারণ ব্যাবসার লক্ষ্য-কোটি সহিহ পথ ও পদ্ধতি রয়েছে। আপনি এই না জায়েয পন্থা পরিহার করে বিকল্প অন্য কোনো পন্থা বা ব্যাবসা গ্রহণ করতে পারেন। দ্বিতীয়ত ফেসবুকে ছবি না দিয়ে আপনার ব্যাবসার মুনাসিব কোনো লোগো/মনোগ্রাম তৈরি করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে বা আহবাবদেরকে ম্যাসেজ কিংবা ফোন ইত্যাদির মাধ্যমে অবগত করে সেই লোগো/মনোগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন। এত সহজ বিকল্প পথ থাকতে ছবি উঠা ও ব্যবহার করা জায়েয হবে না।

সুত্রসমূহ

صحیح البخاری: 5954-5956

صحیح المسلم: 2/200

فتح الباری: 10/401-404

رد المحتار: 1/647

فتاوی محمودیة: 19/470

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 678 জন।

ফেইসবুক ইত্যাদির প্রোফাইল পিকচারে ফটো দেওয়ার হুকুম কি?

ফতওয়া কোডঃ 08-অ,হাহা-09-08-1442

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ! হুযুর একটি মাসআলার জন্য আমি পেরেশান। প্রশ্নটি হল ফেইসবুক ইত্যাদির প্রোফাইল পিকচারে ফটো দেওয়ার হুকুম কি? তাড়াতাড়ি জানিয়ে বাধিত করবেন। আল্লাহ আপনার সব ভালো করুন। আমিন।

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

ফেসবুকের প্রোফাইলে নিজের ছবি দেয়া সম্বন্ধে দারুল উলুম দেওবন্দের অনলাইন ফতওয়া বিভাগে প্রকাশিত একটি ফতওয়া নিচে দেয়া হলো। উল্লেখ্য যে, নিম্নক্ত ফতওয়ার সাথে রহমানিয়া ইমদাদুল উলুম মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় ফাতওয়া বিভাগের মুফতি সাহেবগন একাত্বতা পোষন করছেন।

“প্রশ্নঃ ১. ফেসবুকের প্রোফাইলে নিজের ছবি দেয়া জায়েজ আছে কিনা?
২. ফেসবুক ব্যবহার করা কি গুনাহ?
৩. কারো ছবির প্রশংসা করা কেমন?
৪. ফেসবুকের মাধ্যমে দ্বীনের প্রচার-প্রসার করা কেমন?
৫. ফেসবুকের দ্বীনি এবং জায়েজ ব্যবহার কিভাবে করা যেতে পারে?
উত্তরঃ ১. ফেসবুকের প্রোফাইলে নিজের ছবি ব্যবহার করা নাজায়েজ।
২. ফেসবুকের যায়েজ ব্যবহার, যায়েজ!
৩. পিকচারে যদি কোন প্রাণীর ছবি থাকে, তাহলে তার প্রশংসা করা যাবে না।
৪. ফেসবুকের মাধ্যমে প্রমাণযুক্ত, সঠিক কথাগুলো প্রচার করা যায়েজ।
৫. ফেসবুকের দ্বীনি এবং জায়েজ ব্যবহার, যারা ফেসবুক ব্যবহার করে তাদের থেকে জেনে নিতে হবে, আমাদের তথ্য মতে ফেসবুক ব্যবহার করার দ্বারা অধিকাংশ সময়ই শরীয়ত বিরোধী, অনুপকারী কাজকর্মে পতিত হতে হয়, কোন কোন সময় অনিচ্ছাসত্বেও খারাপ এবং নিকৃষ্ট ফটোসমুহ, এবং অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম সমূহ সামনে এসে যায়, এজন্য সাধারণত সতর্কতাঃ হলো প্রয়োজন ছাড়া ফেসবুক ব্যবহার না করা, তবে প্রয়োাজনের সময় যায়েজ ব্যবহারে সমস্যা নেই।”

সুত্রসমূহ

سورة مائدة: 2

القواعد الفقهية: 5

دارالعلوم دیوبند کے آن لائن فتویٰ نمبر: 1146-1086

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 671 জন।

বিতরের নামাযে দুআয়ে কুনুতের পূর্বে হাত উঠানো কেমন?

ফতওয়া কোডঃ 07-সা,হাসু-09-08-1442

প্রশ্নঃ

আসসলামু আলাইকুম কেমন আছেন হযরত। এক লা-মাযহাবী ভাই বিতরের নামাজের শেষ রাক’আতে দুআয়ে কুনুত এর পূর্বে হাত উঠানোর কোন প্রমাণ নাই বলে দাবি করেছেন, তাই আমি জানতে চাই বিতরের নামাজের শেষ রাক’আতে দুআয়ে কুনুত এর পূর্বে হাত উঠানোর কোন প্রমাণ আছে কি না?

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

বিতরের নামাজের শেষ রাক’আতে দুআয়ে কুনুত পাঠ করার পূর্বে হাত উঠানো হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এটি সুন্নত ও আমলযোগ্য। এটা কিরআত শেষ হওয়ার ইঙ্গিত স্বরূপ অর্থাৎ এর দ্বারা কিরআত ও দূআর মাঝে পার্থক্যকরণ হয়। অতএব যারা বলে হাদিসে এর কোন প্রমাণ নাই তাদের কথা ঠিক নয়।

সুত্রসমূহ

جزء رفع اليدين: 82

مصنف ابن ابي شيبة: 7020-7021

شرح معاني الاثار: 2/178 رقم 3825

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 501 জন।

ইসলামে ত্যাজ্য পুত্রের বিধান কি?

ফতওয়া কোডঃ 06-বিপ্র,হাহা-08-08-1442

প্রশ্নঃ

ইসলামী শরীয়তে ত্যাজ্য পুত্রের বিধান কি?

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

কোন ভাবেই ত্যাজ্য পুত্র করা শরিয়তের দৃষ্টিতে গ্রহনযোগ্য নয়।

সুত্রসমূহ

كتاب النوازل:18/215

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 471 জন।

নামাযে কাতারে দুই মুসল্লীর মাঝে ফাঁকা রাখা

ফতওয়া কোডঃ 05-সা-08-08-1442

প্রশ্নঃ

নামাযে কাতারে দুই মুসল্লীর মাঝে ফাঁকা রাখা কেমন?

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

নামাযের কাতারে গায়ে গায়ে লাগিয়ে কাতার সোজা করা সুন্নত । এটাকে নামাযের পরিপূর্ণতার অংশ বলা হয়েছে । হাদিসে এর অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে । এ সুন্নত তরক করলে তার ব্যাপারে ধমকিও দেওয়া হয়েছে । তাই যদিও দুই মুসল্লির মাঝখানে ফাঁকা রেখে দাঁড়ালে নামায সহী হয়ে যাবে, তবুও স্বাভাবিকভাবে এ সুন্নত ছেড়ে দেওয়া যাবে না, বিনা প্রয়োজনে ছেড়ে দিলে গুনাহ হবে, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে যার করোনা শনাক্ত হয়েছে তাকে মসজিদে আসতে নিষেধ করা হবে, এটাও হাদীস দ্বারাই প্রমণিত, সর্তকতা অবলম্বনের জন্য এতোটুকু যদি যথেষ্ট না হয়, গায়ে গায়ে লাগিয়ে কাতার সোজা করলে করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার বাস্তবেই সম্ভাবনা থাকে, তাহলে আশা করা যায় কাতারের মধ্যে দুই মুসল্লির মাঝখানে ফাঁকা রেখে কাতার সোজা করলে গুনাহ হবে না । নামাযের কোন অসুবিধা হবে না ।

সুত্রসমূহ

صحيح البخاري: 1/100 رقم 716-723

صحيح المسلم: 1/181

سنن ابی داؤد: 1/97 رقم 662

عمدۃ القاری: 5/254

الدر المختار: 1/568

اعلاء السنن: 4/3

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 453 জন।

শিল্পীগোষ্ঠী সমূহের মাধ্যমে ইসলামী সংগীত/সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নাজায়েয

ফতওয়া কোডঃ 04-বিপ্র,হাহা-07-08-1442

প্রশ্নঃ

ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চাই!

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্বন্ধে মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী (ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার) বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকার প্রকাশিত একটি ফতওয়া নিচে দেয়া হলো। উল্লেখ্য যে, নিম্নক্ত ফতওয়ার সাথে রহমানিয়া ইমদাদুল উলুম মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় ফাতওয়া বিভাগের মুফতি সাহেবগন একাত্বতা পোষন করছেন।

“বরাবর, প্রধান মুফতি সাহেব দামাত বারাকাতুহুম, মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা৷
বিষয়ঃ অপসংস্কৃতি!
প্রশ্নঃ ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শরীয়ত সম্মত কিনা? তথাকথিত শিল্পীগোষ্ঠী সমূহের মাধ্যমে ইসলামী সংগীত এর হুকুম কি? এবং সঙ্গীত শোনা জায়েয আছে কিনা? এবং ইহা ভিডিও আকারে প্রচার করা যাবে কিনা?
নিবেদকঃ মাওলানা ইসমাইল সিরাজী দাঃ বাঃ, কে এম রোড, হোঃ নং ৭৪২, মাসুমপুর, সিরাজগঞ্জ।
উত্তরঃ এ কথা অনস্বীকার্য যে, ইসলামে বিনোদন নিষেধ নয়, তাই বলে কোনও অনৈসলামিক কাজকে ইসলামের লেবেল লাগিয়ে ইসলামী বিনোদন বলে চালিয়ে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই, বর্তমান ইসলামী সাংস্কৃতি ও সংগীত অনুষ্ঠান নাম দিয়ে যে অনুষ্ঠান করা হয়, কুরআন-সুন্নাহর বিজ্ঞ আলেমগণ তা নাজায়েয হওয়ার ফতওয়াই দিয়ে থাকেন এবং এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করার অনুমতি দেন না, কেননা এসব অনুষ্ঠানে শরিয়ত পরিপন্থী অনেক কর্মকান্ড হয়ে থাকে। যেমনঃ
১. প্রচলিত ইসলামী সংগীতগুলো সুর, কণ্ঠ, আওয়াজের তরঙ্গ, ইকো, সাউন্ড সিস্টেম, লাইটিং ও ধোয়া নির্গমন ইত্যাদি সব বিষয় আধুনিক গানের সাথে সামাঞ্জস্য রাখে, বিধায় তা গানের অন্তর্ভুক্ত।
২. আধুনিক গানের মতো এখানেও শ্রোতাদের মস্তিষ্কে এক ধরনের বিকৃতি আসে, যেমন গানের সুরে সুরে শরীর ও মাথা দুলানো, পশুর মত অস্বাভাবিক বিকট আওয়াজ, যেমন “ঠিক” ইত্যাদি বলা।
৩. এটা খেল-তামাশা (لھو-لعب) এর অন্তর্ভুক্ত, হাসি, ঠাট্টা, তামাশা, মনমুগ্ধকর অঙ্গভঙ্গি করে শ্রোতাদের মন মাতানো ও তাদের আনন্দ উৎসব এবং মিলন মেলা হিসেবে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
৪. এর দ্বারা মানুষ ইলম, আমল, ইত্যাদি থেকে বিমুখ হয়, কেউ সংগীত বানানো, কন্ঠ সুন্দর করা, গাওয়া, ক্যাসেট বের করা ইত্যাদিতে মূল্যবান সময় ব্যয় করে। কেউ তা শুনে শুনে সময় নষ্ট করে।
৫. এটা জায়েজ কাজ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে নাজায়েয কাজ করার সুযোগ নেয়া হয়, ছবি তোলা ও ভিডিও করা হয়, যা সম্পূর্ণ হারাম ও নাজায়েয।
অর্থাৎ এটি অনেক নাজায়েয কাজ এর উৎস!
এছাড়াও আরোও অনেক নাজায়েয, ক্ষতিকর ও অনর্থক কর্মকান্ড পরিলক্ষিত হয়। অতএব বর্তমান প্রচলিত ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শরীয়ত সম্মত নয়, তাই এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করে কোন শিল্পী গোষ্ঠীর মাধ্যমে সংগীত পরিবেশন করা ও শোনা এবং ভিডিও করে প্রচার করা জায়েয নেই।

উপরক্ত ফতওয়া সত্যায়ন করেছেনঃ হযরত মুফতি আব্দুর রহমান কক্সবাজারী দাঃ বাঃ, মুফতি, কেন্দ্রীয় দারুল ইফতা, মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী (ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার) বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা।
হযরত মুফতি ইনামুল হক কাসেমী দাঃ বাঃ, প্রধান মুফতি, কেন্দ্রীয় দারুল ইফতা, মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী (ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার) বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা।
হযরত মুফতি মুঈনুদ্দীন নানুপুরী দাঃ বাঃ, মুফতি, কেন্দ্রীয় দারুল ইফতা, মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী (ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার) বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা।”

সুত্রসমূহ

سورة لقمان: 6 وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّشۡتَرِیۡ لَهۡوَ الۡحَدِیۡثِ لِیُضِلَّ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ بِغَیۡرِ عِلۡمٍ ٭ۖ وَّ یَتَّخِذَهَا هُزُوًا ؕ اُولٰٓئِکَ لَهُمۡ عَذَابٌ مُّهِیۡنٌ

احكام القران: 3/185, 3/253

رد المحتار: 6/349

صحيح البخاري: 5950

شرح مسلم للنووي: 2/199

مركز الفكر الاسلامي بنغلاديش، برشوندرا داكا، رقم الفتوى: 9985

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 1,499 জন।

মেয়ে ছেলেকে উকিল বানালে, ঐ ছেলে কি ঐ মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে?

ফতওয়া কোডঃ 03-বি-05-08-1442

প্রশ্নঃ

১. জনৈক মেয়ের সাথে আমার চেনা-জানা ছিল। দুজন দুজনকেই বেশ ভালবাসতাম। এক পর্যায়ে দুজনের পরিবারকেই এই ব্যপারে অবগত করা হয়। এবং দুই পরিবারই দুজনের বিয়েতে সম্মতি দেন তবে আরো দেরী করার কথা বলেন। এদিকে আমাদের ফোনে কথা বলার দরুণ কবীরা গোনাহ হচ্ছে, আমরা ডিসিশন নিলাম আমরা বিয়ে করে ফেলবো। এর কিছুদিন পর মেয়ে আমাকে ফোনে তাকে বিয়ে করার জন্যে আমাকে তার বিয়ের উকিল বানিয়ে দেয়। (বলে রাখা ভাল, আমরা দুজনই প্রাপ্ত বয়স্ক) অতঃপর আমি দুজন স্বাক্ষীর সামনে বলি- আমি অমুক মেয়েকে দুই হাজার আটশো এক টাকা ধার্য করে বিয়ে করে নিলাম। আবার শুরুতে এটাও বলেছি- সে আমাকে তাকে বিয়ে করার জন্যে জন্যে তার উকিল বানিয়েছে। এরপর আমি বলেছিলাম, আলহামদুলিল্লাহ। এখন প্রশ্ন হলো:- আমাদের বিয়েটা কি সম্মপন্ন হয়েছে? এখন কি আমরা কথা-বার্তা বললে পাপ হবে? বা তার সাথে স্বামী-স্ত্রী সূলভ আচরণ করা যাবে কিনা? আশা করি দলীল দিয়ে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
২. বর্তমান সময়ে মোহরের সর্বনিম্ন পরিমাণ কত?

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

১. যখন প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে আপনাকে উকিল বানিয়েছে, এবং আপনি দুইজন স্বাক্ষির সামনে তার পক্ষ থেকে উকিল হয়ে বিবাহ করেছেন, সুতরাং আপনার বিবাহ করাটা সহিহ হয়েছে।
২. আর মহরের সর্বনিম্ন পরিমাণ হচ্ছে দশ দিরহাম, ১ দেরহাম = ২.৯৭৫ গ্রাম, এই হিসেবে বর্তমানে সোনা-রুপার দাম হিসেবে মুল্য বের করলে যত টাকা হবে, সেটাই সর্বনিম্ন মহর।

সুত্রসমূহ

الدر المختار: 4/224 ويتولى طرفى النكاح واحد بإيجاب يقوم مقام القبول

الفتاوى الهندية: 1-295

خلاصة الفتاوى: 2/30

الفتاوى التاتارخانية: 4/49

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 600 জন।