আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান এর বক্তব্য বিভ্রান্তিকর, তার বক্তব্য শোনা যাবে না

ফতওয়া কোডঃ 120-বিফা-15-05-1443

প্রশ্নঃ

১. বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান কি আলেম?

২. বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান বলেছেন, “রসুলুল্লাহ সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন”, “দাজ্জাল ইসরাইল থেকে বের হবে”, “আইএমএফ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করার পলিসির মাস্টার মাইন্ড হলো দাজ্জাল”। তার এই বক্তব্য কি সঠিক?

৩. বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান এর বক্তব্য শোনা যাবে কি?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

১. নির্ভরযোগ্য তথ্যমতে বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান দ্বীনি প্রাতিষ্ঠানিক সনদপ্রাপ্ত কোন আলেম নন।

২. রসুলুল্লাহ সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো আত্মহত্যা করতেই যাননি, বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান এর এই বক্তব্য সম্পূর্ন সুন্নাহ বিরোধী, এটা তার অজ্ঞতা ছাড়া কিছুই নয়।

“দাজ্জাল ইসরাইল থেকে বের হবে” বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান এর এই বক্তব্যও সম্পূর্ন সুন্নাহ বিরোধী। অথচ সুনানে তিরমিযিতে এসেছে দাজ্জাল পূর্বদিক থেকে খোরাসান থেকে বের হবে। হযরত আবু বকর রা. থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ দাজ্জাল পূর্ব দিকের একটি ভূমি থেকে বের হবে। যাকে বলা হয় খোরাসান।

“আইএমএফ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করার পলিসির মাস্টার মাইন্ড হলো দাজ্জাল” বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান এর এই বক্তব্যও সম্পূর্ন সুন্নাহ বিরোধী। অথচ সহিহ মুসলিমে হযরত তামীমে দারী রা. এর হাদিসে দাজ্জালকে “মানুষ” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

আমরা দেখতে পেরেছি যে, তিনি নিজের অনুমান, উপলব্ধি ও ব্যক্তিগত যুক্তিকে শরীয়তের মূল ভাষার অনুগামী ও অংশ হিসেবে উপস্থাপন করেন। এবং নিজের ব্যক্তিগত খণ্ডিত অনেক ব্যাখ্যাকে কুরআন ও হাদিসের সবচেয়ে সুনিশ্চিত ব্যাখ্যা হিসেবে উপস্থাপন করেন। বিষয়টা তার জন্য খুবই ভয়াবহ ও উম্মতকে পথভ্রুষ্টতার মধ্যে অবতরন করার শামিল। যা সম্পুর্ন পরিহারযোগ্য।

৩. বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান একজন সাধারন মানুষ, তিনি কোন আলেম নন, কোন নির্ভরযোগ্য আলেমের সাথেও তার আত্বশুদ্ধি মূলক সম্পর্ক নেই। তাই তার কুরআন-সুন্নাহর ব্যাখ্যামুলক বক্তব্য শোনার অনুমতি দেয়া যায় না, কোননা কুরআন-সুন্নাহর ব্যাখ্যামুলক বক্তব্য দেয়া একজন অভিজ্ঞ আলিম ও মুফতির কাজ। অবশ্য তার বক্তব্য অনুযায়ী প্রতিয়মান হয় যে, তিনি একজন গইরে মুকাল্লিদ, যদিও তিনি নিজেকে একজন শুধুমাত্র ‘‘মুসলমান’’ দাবি করেন।

তাই সাধারন মুসলমানদের জন্য কোন গাইরে আলেম ইসলামিক স্কলারের অনুসরন না করে হক্কানী উলামায়ে কিরামের অনুসরন করা ও তাদের বক্তব্য শ্রবন করা উচিৎ।

সুত্রসমূহ

سورة الاعراف: 33 قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَالْإِثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَأَنْ تُشْرِكُوا بِاللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَأَنْ تَقُولُوا عَلَى اللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ

سنن الترميزي: رقم 2163 عن أبي بكر الصديق رضي الله عنه قال : حدّثنا رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : الدَّجَّالُ يَخْرُجُ مِنْ أَرْضٍ بِالْمَشْرِقِ يُقَالُ لَهَا خُرَاسَانُ

صحيح المسلم: رقم 2942 فَانْطَلَقْنَا سِرَاعًا ، حَتَّى دَخَلْنَا الدَّيْرَ ، فَإِذَا فِيهِ أَعْظَمُ إِنْسَانٍ رَأَيْنَاهُ قَطُّ خَلْقًا ، وَأَشَدُّهُ وِثَاقًا ، مَجْمُوعَةٌ يَدَاهُ إِلَى عُنُقِهِ ، مَا بَيْنَ رُكْبَتَيْهِ إِلَى كَعْبَيْهِ بِالْحَدِيدِ

فتح الباري: 12/359 ثم إن القائل ” فيما بَلَغَنا ” هو الزهري ، ومعنى الكلام : أن في جملة ما وصل إلينا من خبر رسول الله صلى الله عليه وسلم في هذه القصة . وهو من بلاغات الزهري وليس موصولاً ، وقال الكرماني : هذا هو الظاهر

شرح الحديث المقتفى فى مبعث النبى المصطفى: 177 هذا من كلام الزهري أو غيره ، غير عائشة ، والله أعلم ؛ لقوله : ”فيما بلغنا” ، ولم تقل عائشة في شيء من هذا الحديث ذلك

سورة البقرة: 217 وَالْفِتْنَةُ أَكْبَرُ مِنَ الْقَتْلِ

سورة النساء: 115 وَمَن يُشَاقِقِ ٱلرَّسُولَ مِنۢ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ ٱلْهُدَىٰ وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ ٱلْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِۦ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصْلِهِۦ جَهَنَّمَ ۖ وَسَآءَتْ مَصِيرًا

سورة المائدة: 2 وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

Scroll to Top