Darul Ifta, Rahmania Madrasah Sirajganj

Darul Ifta, Rahmania Madrasah Sirajganj, Bangladesh.

তিন তালাকের পর দ্বিতীয় বিবাহে সহবাস না করলে হালালা বৈধ হবে?

Fatwa No: 187-তাখু,বি-05-09-1444

প্রশ্নঃ

হুজুর আমার একটা প্রশ্ন, এক ভাই তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছে এবং তালাকের পাঁচ মাস পর ঐ স্ত্রীকে দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে অন্য এক ছেলের সাথে বিয়ে পড়াইছে। বিয়ে পড়ানোর ২০ মিনিট পর সেই ছেলেটি তাঁকে তিন তালাক দিয়েছে তার সাথে সহবাস বা মেলামেশা হয়নি। এর পর আবার নতুন করে তিন মাস দশ দিন ঐ মেয়েটি ইদ্দত পালন করে আগের স্বামীর সাথে বিয়ে পড়ানো হয়েছে এবং সংসার করছে। এখন জানার বিষয় হলো, এটা জায়েজ হবে কিনা এবং তারা স্বামী-স্ত্রী কি এর কারণে কিয়ামতের দিন যেনার কাতারে দাঁড়াবে কি না?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

যদি কোনো কারণে স্বামী তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আর কোন সম্পর্ক বাকি থাকে না, তালাক দেয়ার সাথে সাথেই উভয়েই আলাদা হয়ে যাওয়া জরুরী। তবে যদি স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পরেও উক্ত স্ত্রীকে নিতে চায় তাহলে শরীয়ত সম্মত হালালা করা যেতে পারে।

শরীয়ত সম্মত হালালা হলঃ প্রথম স্বামীর তালাক পতিত হওয়ার পর তালাকের ইদ্দত পালন করতে হবে, ইদ্দত পালন শেষ হলে যদি তালাকপ্রাপ্তা নারীর অন্য কোথাও বিবাহ হয় (শুধু নামে বিবাহ নয় বরং সহবাস জরুরী) এবং দ্বিতীয় স্বামীর সাথে যে কোন কারণে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়, যেমন হয়তো দ্বিতীয় স্বামী ইন্তেকাল করেছেন, অথবা যে কোন কারনে দ্বিতীয় স্বামীও উক্ত নারীকে তিন তালাক দিয়ে দিয়েছেন, এক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্বামীর তালাক দেওয়ার পর উক্ত তালাকের ইদ্দত পালন করার পর চাইলে প্রথম স্বামী উক্ত নারীকে বিবাহ করতে পারে।

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী প্রথম স্বামী তিন তালাক দেওয়ার পর অন্য আরেকজনের কাছে নামমাত্র বিবাহ (দ্বিতীয় স্বামীর সাথে সহবাস ছাড়া) পড়িয়ে দ্বিতীয় স্বামী ২০ মিনিট পর যে তালাক দিয়েছে, এটার কারণে উক্ত নারীর উপর তিন তালাক পতিত হয়েছে ঠিক কিন্তু সহবাস না করার কারণে প্রথম স্বামীর জন্য দ্বিতীয় স্বামীর তালাকের ইদ্দতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও প্রথম স্বামীর বিবাহ করা বৈধ হয়নি। কেননা এখানে দ্বিতীয় স্বামীর সাথে সহবাস না কারর কারনে শরীয়ত সম্মতভাবে হালালা হয়নি। প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যদি তারা এখনো একসঙ্গে জীবন যাপন করছে, এটা তাদের জন্য সম্পুর্ন হারাম ও জেনার শামিল এবং যত দ্রুত সম্ভব বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া জরুরি, এবং সত্য দিলে তওবা ইস্তেগফার করে আল্লাহ তাআলার কাছে মাফ চাওয়া জরুরি।

সুত্রসমূহ

سورۃ البقرۃ: 230 فَإِنْ طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِنْ بَعْدُ حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ

فتاوی ہندیۃ: 1/473 وَإِنْ كَانَ الطَّلَاقُ ثَلَاثًا فِي الْحُرَّةِ وَثِنْتَيْنِ فِي الْأَمَةِ لَمْ تَحِلَّ لَهُ حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ نِكَاحًا صَحِيحًا وَيَدْخُلَ بِهَا ثُمَّ يُطَلِّقَهَا أَوْ يَمُوتَ عَنْهَا، كَذَا فِي الْهِدَايَةِ”

الصحیح لمسلم: 533 عن عائشة قالت جاءت امرأة رفاعة إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقالت  كنت عند رفاعة فطلقني فبت طلاقي فتزوجت عبد الرحمن بن الزبير وان ما معه مثل هدبة الثوب فتبسم رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال أتريدين أن ترجعي إلى رفاعة ؟لا حتى تذوقي عسيلته ويذوق عسيلتك

الھدایۃ: 2/409 ان كان الطلاق ثلاثا في الحرة او ثنتين في الامة لم تحل له حتی تنكح زوجا غيره نكاحا صحيحا ويدخل بها ثم يطلقها او يموت عنها

و الله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 14 জন।

ইনসুলিন বা ইনজেকশন ব্যবহরে রোজার কোন ক্ষতি হয় কি?

Fatwa No: 186-স-26-08-1444

প্রশ্নঃ

১. রমাযান মাস আসছে। অনেক মানুষ এমন আছে যারা ডাইবেটিসে আক্রান্ত এবং খাবারের ১৫ মিনিট পূর্বে ইনসুলিন নিতে হয়। তারা কি ইফতারের সময়ের ১৫ মিনিট পূর্বে ইন্সুলিন নিতে পারবে এবং এতে কি রোজার কোন ক্ষতি হবে?

২. যাদের ঘড়ি ধরে সময় মত এন্টিবায়োটিক খেতে হয় তাদেত করনীয় কি? তারা কি উক্ত সময়ে ওষুধের ইনজেকশন ভার্সন ব্যাবহার করতে পারবে? দয়া করে রমজানের পূর্বে জানালে ভাল হয়। জাযাকাল্লাহ।

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

প্রশ্নে বর্নিত সুরতে ডাইবেটিসে আক্রান্ত রেগীর খাবারের ১৫ মিনিট পূর্বে ইনসুলিন নিতে কোন সমস্যা নেই। আর এন্টিবায়োটিক ওষুধের ইনজেকশন ভার্সনও ব্যাবহার করতে পারবে, রোজার কোন ক্ষতি হবে না।

সুত্রসমূহ

امداد الفتاوی: 2/144-147

فتاوی دار العلوم دیوبند: 6/40-409

فتاوی محمودیہ: 15/173/179

3/212 :آپ کے مسائل اور ان کا حل

امداد الفتاوی: 3/133-134

و الله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 29 জন।

মহিলাদের এসলাহি মজলিস, শবে বারাআত, রমাযান সম্পর্কে আলোচনার মজলিস কি জায়েজ?

Fatwa No: 185-তাত,দাতা-18-08-1444

প্রশ্নঃ

আসসালাম আলাইকুম। আমার এলাকায় অনেক বিখ্যাত এক মুফতি সাহেরের একটি খানকাহ আছে। সেখানে একটি মাদরাসা আছে। উক্ত খানকাহতে মহিলাদের জন্য আলাদা মজলিস, ইসলাহী ও ইলমি আলোচনা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১লা মার্চ মহিলাদের একটি এসলাহি মজলিস আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে শবে বারাআত, রমাযান সম্পর্কে আলোচনা হবে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এরকম মজলিস ইসলাম সমর্থন করে কিনা, যায়েজ নাকি নাজায়েজ ?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

প্ৰশ্নে উল্লেখিত খানকাহটা যদি শরিয়ত মুতাবিক পরিচালিত হয়, এবং সেখানে কোন শরিয়ত গর্হিত কোন কাজ না হয় ও শরয়ী পৰ্দা লংঘন না হয় এবং দূর দুরান্ত থেকে যে সকল মহিলারা আগমন করেন তারা যদি স্বামী বা মাহরাম পুরুষের সাথে আসেন, তাহলে মহিলাদের দ্ধীনি ইলম অৰ্জনের জন্য দিন নিৰ্ধারন করে এ রকম মজলিস এর ব্যবস্থা করা জায়েয আছে। এবং তা শরিয়ত বিরোধী নয়। তবে ফিৎনা থেকে বাচার জন্য নিজ মহল্লায় এমন মজলিস করা যেতে পারে, দূরে সফর করা মারাত্বক ক্ষতির আশংকা বহন করে, নিশ্চিত ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে এমন সফর জায়েয নেই।

হাদীস শরীফে বৰ্নিত আছে যে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলা সাহাবীদের রা. তালীম তরবিয়াতের জন্য একটি দিন নিৰ্ধারন করেছিলেন, উক্ত মসলিসে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলাদেরকে ভিবিন্ন ওয়াজ নসিহত এবং গুরুত্বপূর্ন কাজের আদেশ নিষেধ করতেন।

সুত্রসমূহ

صحيح البخاري: رقم الحديث 101 عن أبي سعيدٍ الخُدريِّ – رضي الله عنه – قال: قالتِ النِّساءُ للنبيِّ – صلى الله عليه وسلم -: غَلَبَنا عليك الرجال، فاجعلْ لنا يومًا من نفسك؛ فوعدهنَّ يومًا لقيهنَّ فيه، فوعظهنَّ وأمرهنَّ

عمدة القاري: 2/124 “قال النووي: فيه استحباب وعظ النسآء و تذكيرهن الآخرة و أحكام الإسلام و حثهن علي الصدقة، و هذا إذا لم يترتب علي ذلك مفسدة أو خوف فتنة علي الواعظ أو الموعوظ و نحو ذلك”

فتاوی محمودیہ: 3/377 الجواب: جائز ہے، حضور اکرم صلی اللہ علیہ وسلم سے بکثرت ثابت ہے، لیکن اگر فتنہ کا اندیشہ ہو تو احتیاط کرنا چاہیے

و الله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 67 জন।

হেফজখানায় ছাত্ররা যদি কুরআনে কারিম নিচে রেখে বসে ও উস্তাদ উপরে বসে?

ফতওয়া কোডঃ 184-আআ,কুকা-06-08-1444

প্রশ্নঃ

আমার জানার বিষয় হলোঃ আমাদের দেশের হেফজখানাগুলোতে দীর্ঘ সময় বসে বসে ছাত্রদের পড়া শুনতে হয়। এ অবস্থায় কোনো কোনো ওস্তাদ বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে পারে না। আবার বসে থাকলেও অনেক কষ্ট করে বসে থাকে। আবার অনেকে এমন দীর্ঘ সময় বসে ক্লাস নিতে হয় বিধায় হেফজখানায় খেদমতই করতে চায় না। আমরা যারা করি আমাদের বেশির ভাগই এর বিকল্প পদ্ধতি খুঁজে থাকি।

এমতাবস্থায় আমাদের হেফজ ক্লাসগুলোতে যদি ওস্তাদদের জন্য এমন চেয়ার টেবিলের ব্যবস্থা করা হয়‌। যা ওয়ালের সাথে মিলানো বা এমন ভাবে বানানো যার সকল দিক থেকেই আটকানো থাকবে, কোনো পার্শ্ব ফাঁকা থাকবে না। ওস্তাদদের নিতম্ব পা সহ সিনা পর্যন্ত আটকানো থাকবে ওস্তাদ ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিবে, কোনো পার্শ্ব থেকে কোনো প্রকার ফাঁকা থাকবে না। অর্থাৎ সম্পূর্ণ ঘেরাও করা থাকবে যাতে তার পা, নিতম্ব দেখা না‌ যায়। যখন কোন ছাত্র পড়া শুনাবেন সে টেবিলের বাহিরে দাড়িয়ে বা বসে শুনাবে।

উল্লিখিত সুরতে টেবিল থেকে ৩/৪ ফিট দূরে (সামনে বা পাশে)বসে অথবা একেবারে পাশে বসে রেহালের উপর কুরাআন শরিফ রেখে পড়া যাবে কিনা? এবং কুরাআন-সুন্নাহ আলোকে উক্ত পদ্ধতিটি কেমন হয়? অনুগ্রহপূর্বক উপরোল্লিখিত বিষয়টি কুরআন সুন্নাহর দলিলের আলোকে জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

মূলত প্ৰশ্নে বৰ্নিত বিষয়টি পবিত্র কালামে পাকের আদবের সাথে সম্প্রিক্ত, এ অবস্থাতে হাফেজ সাহেবদের জন্য এ ধরনের আসনে বসে ছাত্ৰদের পড়া শোনা কোন দোষনীয় নয়, এই ভাবে বসে পড়া শুনতে পারবে, তাতে কোন সমস্যা হবেনা।

সুত্রসমূহ

الدر المختار: (ولہا آداب) ترکہ لا یوجب إساء ة ولا عتابا کترک سنة الزوائد، لکن فعلہ أفضل

آپ کے مسائل اور ان کا حل: 4/446 نچلی منزل میں قرآن کریم کے ہونے کا کوئی حرج نہیں۔

الفتاوي الهندية: واذا حمل المصحف او شيءامن كتب الشريعة علي دابة في جوالق وركب صاحب الجوالق علب الجوالق لا يكره

امداد الاحكام: 1/233

و الله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 92 জন।

ভুলে দুআয়ে কুনুতের স্থানে দুআয়ে মাছুরা পড়লে কি সাজদায়ে সাহু দিতে হবে?

ফতওয়া কোডঃ 183-সা-21-07-1444

প্রশ্নঃ

ভুলে দুআয়ে কুনুতের স্থানে দুআয়ে মাছুরা পড়লে কি সাজদায়ে সাহু দিতে হবে?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

ভুলে যদি কেউ দুআয়ে কুনুতের স্থানে দুআয়ে মাছুরা পড়ে তাহলে সাজদায়ে সাহু দিতে হবেনা‍, কেননা দুআয়ে কুনুত নামে আমরা যে দুআটি পড়ি, বিতর নামাজে সেই দূআটি পড়া সৰ্বোত্ৰম।

তবে এটা ছাড়া এমন কোন দুআও পড়া যাবে যা কুরআন হাদীসের সাথে সাদৃশ্যপূৰ্ন হয় এবং তা মানুষের কথার সাথে সাদৃশ্যপূৰ্ন না হয়। যেমন আল্লাহর নবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত হাসান রাযিঃ কে কুনুতে পড়ার জন্য এই দুআ শিক্ষা দিয়েছেন اللهم اهدينا فيمن هديت… তবে নবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে আরো অন্যান্য ভিন্ন দুআও বৰ্নিত আছে।

সুত্রসমূহ

الفتاوى الهندية: كتاب الصلاة. الباب الثاني في صلاة الوتر

بدائع الصنائع: كتاب الصلاة. فصل في انواع الصلاة الواجبة. و منها صلاة الوتر. فصل في القنوت. (واما دعاء القنوت فليس في القنوت دعاء موقت كذا ذكر الكرخي في كتاب الصلاة. ( حتي قال فيه) ولو قرء غيره جاز. ولو قرء معه غيره كان حسنا

البحر الرائق: كتاب الصلاة…باب الوتر و النفل

المبسوط: كتاب الصلاة. باب احكام الوتر. الفصل الثاني. القنوت في الوتر

رد المحتار: كتاب الصلاة باب الوتر و النوافل

و الله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 80 জন।

মানুষকে অন্য কোনো চতুষ্পদ প্রাণীর সাথে তুলনা করা কেমন?

ফতওয়া কোডঃ 182-আআ-09-07-1444

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম, আমার প্রশ্ন হলো, কোনো মানুষকে অন্য কোনো চতুষ্পদ প্রাণীর সাথে তুলনা করা কি জায়েজ?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

কোন মানুষ কে অন্য কোন চতুষ্পদ জন্তুর সাথে তুলনা করা কয়েক ভাবে হতে পারে;

১. কোন প্রাণীর সাথে তুলনা করার দ্বারা যদি ব্যাক্তির গুনকীর্তণ, প্রশংসা, উৎসাহ উদ্দীপনা ইত্যাদি উদ্দেশ্য হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই, তা একাধিক হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

২. প্রাণীর সাথে তুলনা করার দ্বারা যদি কাউকে গালি দেয়া, কষ্ট দেয়া, হেয় প্রতিপন্ন করা, ভর্ৎসনা, ব্যঙ্গ , উপহাস, বা অন্য কোন খারাপ উদ্দেশ্য হয়, তাহলে জায়েজ নেই।

সুত্রসমূহ

سورة الأعراف: 175-176 وَاتلُ نَبَأَ الَّذِي آتَيْنَاهُ آيَاتِنَا فَانْسَلَخَ مِنْهَا فَأَتْبَعَهُ الشَّيْطَانُ فَكَانَ مِنَ الْغَاوِينَ * وَلَوْ شِئْنَا لَرَفَعْنَاهُ بِهَا وَلَكِنَّهُ أَخْلَدَ إِلَى الْأَرْضِ وَاتَّبَعَ هَوَاهُ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ الْكَلْبِ إِنْ تَحْمِلْ عَلَيْهِ يَلْهَثْ أَوْ تَتْرُكْهُ يَلْهَثْ ذَلِكَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا فَاقْصُصِ الْقَصَصَ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ

سورة الجمعة: 5 مَثَلُ الَّذِينَ حُمِّلُوا التَّوْرَاةَ ثُمَّ لَمْ يَحْمِلُوهَا كَمَثَلِ الْحِمَارِ يَحْمِلُ أَسْفَارًا بِئْسَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِ اللَّهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ

سورة الحجرات: 11 يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَى أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

رواه البخاري و مسلم: 48+64 سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ

مصنف ابن أبي شيبة: 5/282 قال سعيد بن المسيب رحمه الله: ” لا تقل لصاحبك يا حمار ، يا كلب ، يا خنزير ، فيقول لك يوم القيامة : أتراني خلقت كلبا أو حمارا أو خنزيرا ” انتهى

مصنف ابن أبي شيبة: 5/283 وقال إبراهيم النخعي رحمه الله : ” كانوا يقولون : إذا قال الرجل للرجل : يا حمار ، يا كلب ، يا خنزير ، قال الله له يوم القيامة : أتراني خلقت كلبا أو حمارا أو خنزيرا ” انتهى

مجمع الزوائد: 9/271 قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “أنَّ رسولَ اللهِ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم قال والَّذي نفسي بيدِه إنَّه لَمكتوبٌ عندَ اللهِ في السَّماءِ السَّابعةِ حمزةُ أسَدُ اللهِ وأسَدُ رسولِه”

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 104 জন।

ভুলে সাজদায়ে সাহু ভুলে গেলে, নামাজ শেষে মনে পরলে করনীয়

ফতওয়া কোডঃ 181-সা-30-06-1444

প্রশ্নঃ

আমার নামাযে ওয়াজিব ছুটে যায়। কিন্তু শেষ বৈঠকে ভুলে সাহু সাজদাহ না করে উভয় দিকে সালাম ফিরিয়ে নামাযের পরবর্তী আমল তাসবিহ আদায় শুরু করি। যখন সুবহানাল্লাহ ২/৩বার পাঠ করি তখন সাহু সাজদাহর কথা স্বরণ হয় এবং সাথে সাথে তা আদায় করি। এমতাবস্থায় আমার নামায কি হয়েছে? আর তাসবিহ পাঠ করা কি নামাজ পরিপন্থী কাজ?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

প্রশ্নোক্ত সুরতে সাহু সিজদার পর তাশাহুদ পড়লে আপনার নামায হয়েছে। অন্যথায় ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়ার গুনাহ হবে। তাসবীহ পাঠ করা নামাজ পরিপন্থী নয়।

সুত্রসমূহ

رد المحتار على الدر المختار: 2/558

مراقي الفلاح: 250

الفتاوى الرحيمية: 5/194

فتاوى محمودية: 11/524

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 99 জন।

দাড়ি রাখা ওয়াজিব

ফতওয়া কোডঃ 180-হাসু-03-06-1444

প্রশ্নঃ

দাড়ি রাখা কি ওয়াজিব না সুন্নত?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

সর্বসম্মতিক্রমে দাড়ি রাখা ওয়াজিব। কমপক্ষে এক মুষ্টি পরিমান রাখা ওয়াজিব, এর চেয়ে কম রাখা নাজায়েজ। বেশি রাখা জায়েজ।

সুত্রসমূহ

سورة طه: 94 قَالَ يَبۡنَؤُمَّ لَا تَأۡخُذۡ بِلِحۡيَتِي وَلَا بِرَأۡسِيٓۖ إِنِّي خَشِيتُ أَن تَقُولَ فَرَّقۡتَ بَيۡنَ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ وَلَمۡ تَرۡقُبۡ قَوۡلِي 

مشكاة المصابيح: 2/380 وعن ابن عمر قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ” خالفوا المشركين : أوفروا اللحى وأحفوا الشوارب ” . وفي رواية : ” أنهكوا الشوارب وأعفوا اللحى “( متفق عليه )

الفتاوى الهندية: 5/358 ولا بأس أن يقبض على لحيته فإن زاد على قبضته منها شيء جزه

رد المحتار: 9/583 وأما الأخذ منها وهي دون ذلك كما يفعله بعض المغاربة، ومخنثة الرجال فلم يبحه أحد ، وأخذ كلها فعل يهود الهند ومجوس الأعاجم فتح

فى المعجم الوسيط: باب اللام (اللحي ) منبت اللحية من الإنسان وغيره وهما لحيان والعظمان اللذان فيهما الأسنان من كل ذي لحى

سنن أبي داود: 1/8

البحر الرائق: 2/490

فتاوى محمودية: 27/484

البحر الرائق: 2/490

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 104 জন।

সিসিটিভির মাধ্যমে ছবি উঠানো সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম!

ফতওয়া কোডঃ 179-হাহা-04-05-1444

প্রশ্নঃ

সিসিটিভির মাধ্যমে ছবি উঠানো জায়েজ আছে কি?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

ক্যামেরা, ডিজিটাল ক্যামেরা, স্মার্টফোন, ওয়েব ক্যামেরা ও সিসিটিভি বা এর সংশ্লিষ্ট যেকোনো যন্ত্রের মাধ্যমে ছবি উঠানো একই কথা, ইসলামী শরীয়তে তা সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম।

নিঃসন্দেহে সিসিটিভি প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়, তবে এই ধরনের প্রয়োজনকে দারুল উলুম দেওবন্দসহ বিশ্বের গ্রহণযোগ্য দারুল ইফতা ও ইসলামী আইনবিদগণ শরীয়ত সম্মত প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত করেননি।

বিধায় সিসিটিভির মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা যেভাবে প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় ছবি উঠানো হচ্ছে, এটা কখনো জায়েজ হতে পারে না।

সুত্রসমূহ

فتاوی شامی, حاشية ابن عابدين: 1/647 قال في البحر: وفي الخلاصة وتكره التصاوير على الثوب صلى فيه أو لا، انتهى، وهذه الكراهة تحريمية. وظاهر كلام النووي في شرح مسلم: الإجماع على تحريم تصوير الحيوان، وقال: وسواء صنعه لما يمتهن أو لغيره، فصنعته حرام بكل حال؛ لأن فيه مضاهاة لخلق الله تعالى، وسواء كان في ثوب أو بساط أو درهم وإناء وحائط وغيرها اهـ.

غمز عیون البصائر شرح الأشباہ والنظائر لابن نجیم: 1/277 فالضرورة بلوغہ حداً إن لم یتناول الممنوع ھلک أو قارب وھذا یبیح تناول الحرام، والحاجة کالجائع الذي لو لم یجد ما یأکلہ لم یھلک غیر أنہ یکون في جھد ومشقة، وھذا لا یبیح الحرام ویبیح الفطر فی الصوم 

درر الحکام شرح مجلة الأحکام: 1/38 الضرورة ھي الحالة الملجئة لتناول الممنوع شرعاً، والحاجة: أما الحاجة فإنھا وإن کانت حالة جھد ومشقة فھي دون الضرورة ولا یتأتی معھا الھلاک فلذا لا یستباح بھا الممنوع شرعاً، مثال ذلک: الصائم المسافر بقاوٴہ صائماً یحملہ جھداً ومشقة فیرخص لہ الإفطار لحاجتہ للقوة علی السفر 

صحيح البخاري: 1/160  الضرورة ھي خوف الضرر بترک الأکل إما علی نفسہ أو علی عضو من أعضائہ 

أصول الإفتا وآدابہ: 268-269 وإن ھذا التعریف وإن کان مختصاً بضرورة أکل المحرم ولکنہ یشمل تعاطي کل محظور بشرط أن یکون ھناک خوف علی النفس أو العضو کارتکاب الکذب أو المحظورات الأخری في حالة الإکراہ الملجیٴ، ویجب لتحقق الضرورة أمور: الأول أن یکون ھناک خوف علی النفس أو علی العضو، الثاني: أن تکون الضرورة قائمة لا منتظرة بمعنی أن یقع خوف الھلاک أو التلف بغلبة الظن حسب التجارب لا مجرد وھم بذلک، الثالث: أن لا یکون لدفع الضرر وسیلة أخری من المباحات ویغلب علی ظن المبتلی بہ أن دفع الضرر متوقع بارتکاب بعض المحرمات الخ

شرح القواعد الفقھیة: 159  وأما المنھیات التي تباح عند الضرورة کإتلاف مال الغیر وشرب المسکر فإنھا تحل بل تجب بالملجیٴ لا بغیر الملجیٴ 

شرح القواعد الفقھیة: 210 والظاھر أن ما یجوز للحاجة إنما یجوز فیما ورد فیہ نص یجوزہ أو تعامل أو لم یرد فیہ شیٴ منھما ولکن لم یرد فیہ نص یمنعہ بخصوصہ وکان لہ نظیر فی الشرع یمکن إلحاقہ بہ وجعل ما ورد في نظیرہ وارداً فیہ 

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 390 জন।

জুমুআর খুতবায় সম্মিলিত দুআ করা জায়েজ আছে কি?

ফতওয়া কোডঃ 178-জুই-28-04-1444

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম, জুমুআর খুতবায় দুআর সময় খতিব সাহেবসহ মুসল্লিরা সম্মিলিত ভাবে হাত তুলে দুআ করা জায়েজ আছে কি? আর যদি জায়েজ না হয় তাহলে এটা কি বিদআত হবে?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

খুতবায় হাত তুলে দুআ করার অনুমতি নেই, ইমাম-মুসল্লী দুই জনের জন্যই, বরং এ সময় কেবল তৰ্জনীর ইশারায় দুআ করার অনুমতি আছে, খতীবকে হাত তুলে দুআ করতে দেখে বহু সলফ বদ দুআ করতেন।

বিশর বিন মারওয়ানকে খুতবায় হাত তুলে দুআ করতে দেখে হযরত উমারাহ বিন রুআইবান রহ. বললেনঃ ঐ হাত দুটিকে আল্লাহ তাআলা বিকৃত করুন।

হযরত মাসরুক রহ. বলেনঃ জুমুআর দিন ইমাম-মুক্তাদি মিলে যারা হাত তুলে দুআ করে আল্লাহ তাআলা তাদের হাত কেটে নিন।

অনুরুপ ভাবে শরিয়তে অনুমতি নাই মুক্তাদীদের হাত তুলে দোআ করা, বরং ইমাম খুতবায় হাত না তুলে দুআ করলে মুক্তাদী হাত না তুলেই একাকী নিন্মস্বরে বা চুপে চুপে আমীন বলবে।

হা, খুতবায় বৃষ্টি প্ৰাৰ্থনা বা বৃষ্টি বন্ধ করার জন্য দুআ করার সময় ইমাম-মুক্তাদী সকলে হাত তুলে দুআ করবেন। এবং মুক্তাদীরা আমীন আমীন বলবেন।

সুত্রসমূহ

صحيح المسلم: رقم 874

سنن ابي داؤد: رقم 04

مصنف ابن ابي شيبة: رقم 5491-5493

صحيح البخاري: رقم 932-933, 1013-1029

سنن الترمذي: كتاب الجمعة

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

আপনিসহ এই ফতওয়াটি পড়েছেন মোট 164 জন।