অভিভাবক ছাড়াও বিবাহ শুদ্ধ হয়!

ফতওয়া কোডঃ 171-বি-26-01-1444

প্রশ্নঃ

যদি বিয়ের জন্য ছেলের ফ্যামিলি রাজি থাকে, কিন্তু মেয়ের ফ্যামিলি রাজি না থাকে, তবে বিয়ের জন্য যদি ছেলে মেয়ে উভয় জনই রাজি থাকে এবং মেয়ের ফ্যামিলির যদি বাবা মা বা বড় ভাই কেহ রাজী যদি না থাকে, তারা যদি উভয় জনই নিজেরা নিজেরা বিয়ে করে নেয় তাহলে কি বিয়েটা হালাল হবে?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক বুঝদার সাক্ষীর সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক। তবে যদি কুফু ছাড়া বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রকে বিবাহ করে, যার কারণে মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারবে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

হযরত আয়শা রা. থেকে বর্ণিতঃ রাসূল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে মহিলাকে তার অভিভাবক বিয়ে দেয়নি, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল। অভিভাবক ছাড়া মহিলা কর্তৃক বিয়ে সম্পন্ন না হওয়ার হাদীসটি হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ এর। অথচ খোদ আয়শা রাঃ তার ভাই আব্দুর রহমানের মেয়ে হাফসাকে তার অভিভাবক আব্দুর রহমানকে ছাড়াই নিজে বিয়ে দিয়েছিলেন মুনজির বিন যুবায়েরের সাথে।

সুতরাং বুঝা গেল যে, উক্ত হাদীস দ্বারা খোদ বর্ণনাকারী হযরত আয়শা রাঃ নিজেই বিবাহ শুদ্ধ হয় না একথা বুঝাননি। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, বিয়ে অসম্পূর্ণ হয় অভিভাবক ছাড়া। কারণ, যে অভিভাবক মেয়েকে লালন পালন করল, তাকে না জানিয়ে বিয়ে করাটাতো অসম্পূর্ণই। তাই বলা হয়েছে তা বাতিল। বাতিল মানে অসম্পূর্ণ।

সুতরাং উপরে প্রশ্নের বর্ননা মতে তারা যদি প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে তাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে গেছে। যদিও তাদের পরিবার কিছুই জানে না। কিংবা যদি তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে।

সুত্রসমূহ

صحيح مسلم: 1421 عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.

المصنف لابن أبي شيبة: 15953 عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: ” جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ، وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَالَ: صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ

سنن ابن ماجه: 1874 عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: جَاءَتْ فَتَاةٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: ” إِنَّ أَبِي زَوَّجَنِي ابْنَ أَخِيهِ، لِيَرْفَعَ بِي خَسِيسَتَهُ، قَالَ: فَجَعَلَ الْأَمْرَ إِلَيْهَا، فَقَالَتْ: قَدْ أَجَزْتُ مَا صَنَعَ أَبِي، وَلَكِنْ أَرَدْتُ أَنْ تَعْلَمَ النِّسَاءُ أَنْ لَيْسَ إِلَى الْآبَاءِ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ “

سنن أبي داود: 2096 حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: ” أَنَّ جَارِيَةً بِكْرًا أَتَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَذَكَرَتْ أَنَّ أَبَاهَا زَوَّجَهَا وَهِيَ كَارِهَةٌ فَخَيَّرَهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ”

سنن أبي داود: 1879 عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَيُّمَا امْرَأَةٍ نَكَحَتْ بِغَيْرِ إِذْنِ مَوَالِيهَا، فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ»، ثَلَاثَ مَرَّاتٍ «فَإِنْ دَخَلَ بِهَا فَالْمَهْرُ لَهَا بِمَا أَصَابَ مِنْهَا، فَإِنْ تَشَاجَرُوا فَالسُّلْطَانُ وَلِيُّ مَنْ لَا وَلِيَّ لَهُ»

المصنف لابن أبي شيبة: 15955 أَنَّ عَائِشَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، زَوَّجَتْ حَفْصَةَ بِنْتَ عَبْدِ الرَّحْمنِ، الْمُنْذِرَ بْنَ الزُّبَيْرِ. وَعَبْدُ الرَّحْمنِ غَائِبٌ بِالشَّأْمِ.

إعلاء السنن: 11/65-70

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

Scroll to Top