শিল্পীগোষ্ঠী সমূহের মাধ্যমে ইসলামী সংগীত/সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নাজায়েয

ফতওয়া কোডঃ 04-বিপ্র,হাহা-07-08-1442

প্রশ্নঃ

ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চাই!

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্বন্ধে মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী (ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার) বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকার প্রকাশিত একটি ফতওয়া নিচে দেয়া হলো। উল্লেখ্য যে, নিম্নক্ত ফতওয়ার সাথে রহমানিয়া ইমদাদুল উলুম মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় ফাতওয়া বিভাগের মুফতি সাহেবগন একাত্বতা পোষন করছেন।

“বরাবর, প্রধান মুফতি সাহেব দামাত বারাকাতুহুম, মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা৷
বিষয়ঃ অপসংস্কৃতি!
প্রশ্নঃ ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শরীয়ত সম্মত কিনা? তথাকথিত শিল্পীগোষ্ঠী সমূহের মাধ্যমে ইসলামী সংগীত এর হুকুম কি? এবং সঙ্গীত শোনা জায়েয আছে কিনা? এবং ইহা ভিডিও আকারে প্রচার করা যাবে কিনা?
নিবেদকঃ মাওলানা ইসমাইল সিরাজী দাঃ বাঃ, কে এম রোড, হোঃ নং ৭৪২, মাসুমপুর, সিরাজগঞ্জ।
উত্তরঃ এ কথা অনস্বীকার্য যে, ইসলামে বিনোদন নিষেধ নয়, তাই বলে কোনও অনৈসলামিক কাজকে ইসলামের লেবেল লাগিয়ে ইসলামী বিনোদন বলে চালিয়ে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই, বর্তমান ইসলামী সাংস্কৃতি ও সংগীত অনুষ্ঠান নাম দিয়ে যে অনুষ্ঠান করা হয়, কুরআন-সুন্নাহর বিজ্ঞ আলেমগণ তা নাজায়েয হওয়ার ফতওয়াই দিয়ে থাকেন এবং এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করার অনুমতি দেন না, কেননা এসব অনুষ্ঠানে শরিয়ত পরিপন্থী অনেক কর্মকান্ড হয়ে থাকে। যেমনঃ
১. প্রচলিত ইসলামী সংগীতগুলো সুর, কণ্ঠ, আওয়াজের তরঙ্গ, ইকো, সাউন্ড সিস্টেম, লাইটিং ও ধোয়া নির্গমন ইত্যাদি সব বিষয় আধুনিক গানের সাথে সামাঞ্জস্য রাখে, বিধায় তা গানের অন্তর্ভুক্ত।
২. আধুনিক গানের মতো এখানেও শ্রোতাদের মস্তিষ্কে এক ধরনের বিকৃতি আসে, যেমন গানের সুরে সুরে শরীর ও মাথা দুলানো, পশুর মত অস্বাভাবিক বিকট আওয়াজ, যেমন “ঠিক” ইত্যাদি বলা।
৩. এটা খেল-তামাশা (لھو-لعب) এর অন্তর্ভুক্ত, হাসি, ঠাট্টা, তামাশা, মনমুগ্ধকর অঙ্গভঙ্গি করে শ্রোতাদের মন মাতানো ও তাদের আনন্দ উৎসব এবং মিলন মেলা হিসেবে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
৪. এর দ্বারা মানুষ ইলম, আমল, ইত্যাদি থেকে বিমুখ হয়, কেউ সংগীত বানানো, কন্ঠ সুন্দর করা, গাওয়া, ক্যাসেট বের করা ইত্যাদিতে মূল্যবান সময় ব্যয় করে। কেউ তা শুনে শুনে সময় নষ্ট করে।
৫. এটা জায়েজ কাজ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে নাজায়েয কাজ করার সুযোগ নেয়া হয়, ছবি তোলা ও ভিডিও করা হয়, যা সম্পূর্ণ হারাম ও নাজায়েয।
অর্থাৎ এটি অনেক নাজায়েয কাজ এর উৎস!
এছাড়াও আরোও অনেক নাজায়েয, ক্ষতিকর ও অনর্থক কর্মকান্ড পরিলক্ষিত হয়। অতএব বর্তমান প্রচলিত ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শরীয়ত সম্মত নয়, তাই এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করে কোন শিল্পী গোষ্ঠীর মাধ্যমে সংগীত পরিবেশন করা ও শোনা এবং ভিডিও করে প্রচার করা জায়েয নেই।

উপরক্ত ফতওয়া সত্যায়ন করেছেনঃ হযরত মুফতি আব্দুর রহমান কক্সবাজারী দাঃ বাঃ, মুফতি, কেন্দ্রীয় দারুল ইফতা, মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী (ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার) বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা।
হযরত মুফতি ইনামুল হক কাসেমী দাঃ বাঃ, প্রধান মুফতি, কেন্দ্রীয় দারুল ইফতা, মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী (ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার) বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা।
হযরত মুফতি মুঈনুদ্দীন নানুপুরী দাঃ বাঃ, মুফতি, কেন্দ্রীয় দারুল ইফতা, মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী (ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার) বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা।”

সুত্রসমূহ

سورة لقمان: 6 وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّشۡتَرِیۡ لَهۡوَ الۡحَدِیۡثِ لِیُضِلَّ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ بِغَیۡرِ عِلۡمٍ ٭ۖ وَّ یَتَّخِذَهَا هُزُوًا ؕ اُولٰٓئِکَ لَهُمۡ عَذَابٌ مُّهِیۡنٌ

احكام القران: 3/185, 3/253

رد المحتار: 6/349

صحيح البخاري: 5950

شرح مسلم للنووي: 2/199

مركز الفكر الاسلامي بنغلاديش، برشوندرا داكا، رقم الفتوى: 9985

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

Scroll to Top