এবছর (১৪৪৫ হিজরী) এর সর্বনিম্ন ফিতরা ১০০/=, সর্বোচ্চ ৩,৫৬০/= টাকা।

পেনশনের টাকা ব্যাংকে রেখে ইন্টারেস্ট খাওয়া হারাম, তাহলে রিটায়ার্ড ব্যক্তি এখন কি করবে?

ফতওয়া কোডঃ 195-সুই,ব্যবা-22-09-1444

প্রশ্নঃ

পেনশনের টাকা ইসলামি ব্যাংকে রেখে ইন্টারেস্ট খাওয়া হালাল নাকি হারাম? তাহলে এই ব্যক্তি রিটায়ার্ড করেছে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে সে এখন কি করবে?এখন তো তার ব্যাবসা করার বয়স ও নেই। মুফতি সাহেবের নিকট দলিল সহ জানতে চাই।

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

উলামায়ে কিরামের তাহকীক মতে ইসলামী ব্যাংক শরয়ী ব্যবসানীতি পুরোপুরি অনুসরন করে না। তাই তাদের কাছে জমা রাখা টাকার লভ্যাংশ সুদ হিসেবেই ধর্তব্য হবে, যা সম্পূর্ণ হারাম। এখন তার নিজের পক্ষে ব্যবসা করা সম্ভব না হলে অন্যের সাথে مشاركة (মুশারাকা) অথবা مضاربة (মুদারাবা) এর ভিত্তিতে ব্যবসা করতে পারে বা নিজে কোনো ব্যবসা আরম্ভ করে লোকের মাধ্যমে ও পরিচালনা করতে পারে।

১. “মুশরাকা” মূলত আরবী শব্দ। যার আভিধানিক অর্থ শরীক বা অংশীদার হওয়া। কারবার ও ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিভাষায় মুশারাকা বলতে এমন এক যৌথ কারবারকে বুঝায়, যে কারবারে সকল অংশীদার যৌথ কারবারের লাভ লোকসানে শরীক থাকে। মুশারাকা বা অংশীদারি কারবার সুদভিত্তিক অর্থায়নের একটি আদর্শিক বিকল্প ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থায় সম্পদ উৎপাদন ও বণ্টন উভয়ের সাথে অংশীদারগণ জড়িত থাকে। আধুনিক পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থায় সুদই একমাত্র মাধ্যম যাকে সর্বপ্রকারের অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ইসলামে যেহেতু সুদ হারাম, সেহেতু একে কোন ধরনের অর্থায়ন (Financing) এর জন্য ব্যবহার করা যায় না। এজন্য ইসলামী মূলনীতিভিত্তিক অর্থ-ব্যবস্থায় ‘মুশারাকা’ সময়ের দাবী পূরণে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে সক্ষম।

২. “মুদারাবা” অংশীদারিত্বের একটি বিশেষ পদ্ধতি। যে অংশীদারিত্বে এক শরীক অপরকে ব্যবসায় বিনিয়োগের জন্য অর্থ সরবরাহ করে। পুঁজি বিনিয়োগ করে প্রথম পক্ষ, তাকে বলা হয় “রাব্বুলমাল” বা “পুঁজি বিনিয়োগকারী” অপরদিকে ব্যবসার পরিচালনা (Management) এবং কাজের দায়িত্ব দ্বিতীয় পক্ষের উপর, যাকে বলা হয় “মুদারিব” বা “কারবারি”।

মুশারাকা এবং মুদারাবার মাঝে পার্থক্য নিম্ন-বর্ণিত দিকগুলোতে সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করা যায়।

(১) মুশারাকায় পুঁজি উভয়পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু মুদারাবায় পুঁজি বিনিয়োগের দায়িত্ব শুধু রাব্বুল মালের উপর।

(২) মুশারাকায় সকল অংশীদারগণ ব্যবসার জন্য কাজ করতে পারে এবং ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় (Management) সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু মুদারাবায় রাব্বুলমাল ব্যবস্থাপনায় অংশ গ্রহণের কোন অধিকার রাখেনা, বরং তা শুধুমাত্র মুদারিবই আঞ্জাম দিবে।

(৩) মুশারাকায় সকল অংশীদার স্বীয় পুঁজির পরিমাণ অনুপাতে লোকসানে অংশীদার হয়। কিন্তু মুদারাবায় যদি লোকসান হয়, তাহলে তা শুধুমাত্র রাব্বুলমালকেই বহন করতে হবে। কেননা, মুদারিবতো কোন মূলধনই বিনিয়োগ করে না। তার লোকসান শুধুমাত্র এতটুকু যে, শ্রম বিফলে গেল এবং কোন পারিশ্রমিক পেল না।

সুত্রসমূহ

سورة البقرة: 275 ٱلَّذِینَ یَأۡكُلُونَ ٱلرِّبَوٰا۟ لَا یَقُومُونَ إِلَّا كَمَا یَقُومُ ٱلَّذِی یَتَخَبَّطُهُ ٱلشَّیۡطَـٰنُ مِنَ ٱلۡمَسِّۚ ذَ ٰ⁠لِكَ بِأَنَّهُمۡ قَالُوۤا۟ إِنَّمَا ٱلۡبَیۡعُ مِثۡلُ ٱلرِّبَوٰا۟ۗ وَأَحَلَّ ٱللَّهُ ٱلۡبَیۡعَ وَحَرَّمَ ٱلرِّبَوٰا۟ۚ …لله

مسند أحمد بن حنبل: رقم 3809 عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

معارف السنن: 1/34 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء

رد المحتار: 7/31

بذل المجهود: 1/37

اسلامي بنكاري كي بنيادي: مفتي تقي عثماني

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

Scroll to Top