এবছর (১৪৪৫ হিজরী) এর সর্বনিম্ন ফিতরা ১০০/=, সর্বোচ্চ ৩,৫৬০/= টাকা।

মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা, মহিলা মাদরাসায় পড়া বা সমর্থন করা কেমন?

ফতওয়া কোডঃ 97-আমামা,তাত-12-04-1443

প্রশ্নঃ

মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা, মহিলা মাদরাসায় পড়া বা সমর্থন করা সম্বন্ধে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হবো!

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

দৈনন্দিন জীবন যাপন করার মত ইসলামী শিক্ষা অর্জন করা প্রত্যেক নর-নারীর উপর ফরজে আঈন৷ তবে কুরআন-হাদীসের গভীর জ্ঞান তথা শরীয়তের উপর অভিজ্ঞতা অর্জন মুসলিম মিল্লাতের যেকোন সমস্যার সমাধান দেওয়ার মতো উচ্চশিক্ষা গ্রহণ প্রত্যেক যুগে একদল মুসলমানের ওপর ফরজে কিফায়া৷ এ উচ্চশিক্ষা গ্রহণের দায়িত্ব চৌদ্দশত বছর যাবত পুরুষগনই আঞ্জাম দিয়ে আসছেন৷ শরীয়তের আলোকে এ দায়িত্ব কোন মহিলাকে দেওয়া হয়নি৷ এ কারণে ইসলামের সোনালী যুগ থেকে হাজার বছর পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষা অর্জনের জন্য পুরুষদের অসংখ্য মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হলেও মহিলাদের কোন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়নি৷

আকাবিরগন দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করেছেন, কিন্ত শুধু নারীদের জন্য আলাদা কোন শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেননি। সত্যই এটার প্রয়োজন হলে অবশ্যই তারা মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করতেন। অনেকে শর্ত-সাপেক্ষে জায়েয বললেও এই ফিৎনার যুগে সকল শর্ত মানা সম্ভব নয় বলে আকাবিরে উলামা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

সুতরাং নারীদের জন্য ইসলামী শিক্ষা ঐ পদ্ধতিতেই হওয়া উচিত, যেটা ইসলামী সোনালী যুগ থেকে এ পর্যন্ত চলে আসছে৷ অপ্রাপ্ত বয়সে পিতার বাড়িতে ফোরকানিয়া মক্তবে শিখবে আর বিবাহের পর স্বামীর দায়িত্বেই তার প্রয়োজনীয় ইলম হাসিল করবে৷ বা এলাকার অভিজ্ঞ মুফতিগণ মিলে মাদরাসার ব্যানার ছাড়া মহল্লা ভিত্তিক ঘর ঘর মকতব কায়েম করবে, যেখানে নারীরা দিনের শুরু ভাগের ২/৩ ঘন্টা প্রয়োজনীয় ইলম হাসিল করবে৷

প্রয়োজনে নারীর কোন মাহরাম ব্যক্তি অন্য কোন মাহরাম যিনি আলেম হবেন, অথবা দ্বীনি ইলম সম্বন্ধে অভিজ্ঞ নারী থেকে বর্তমানে ইচ্ছা করলেই খুব সহজে প্রয়োজনীয় ইলম হাসিল করতে পারবে। এজন্য সর্বচ্চ অনাবাসিক বালিকা মাদরাসা প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া যেতে পারে যেখানে নারীরা সকালে এসে বিকালে চলে যাবে।

বর্তমানে সাবালিকা মহিলাদের জন্য পুরুষ শিক্ষকের মাধ্যমে আবাসিক মাহরাম বিহীন বসবাসের মাধ্যমে মহিলা মাদ্রাসার যে প্রচলন ঘটেছে, তা কোন পর্দানশীন ইসলামিক আদর্শবান নারীর কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না৷ যার কারণে দারুল উলুম দেওবন্দসহ পুরো বিশ্বের বিচক্ষণ, অভিজ্ঞ মুফতিগণ প্রচলিত মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, সেথায় অধ্যয়ন করা ও এর সাথে সম্প্রিক্ত থাকাকে দ্বীনী খিদমাত বলে ফতওয়া দেননি৷ এজন্য ফিৎনার এই যুগে মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা, মহিলা মাদরাসায় পড়া বা সমর্থন করা শরীয়ত সমর্থন করে না বিধায় তা পরিত্যাজ্য।

সুত্রসমূহ

খুলাসাতুল ফাতাওয়াঃ ২/৫৩, আল বেনায়াহঃ ২/৪২০, আল কেফায়া মাআ ফাতহুল কাদিরঃ ১/৩১৮, বেশেতী যিওরঃ ১/৯১, জাওয়াহিরুল ফিকাহঃ ৪/১৪৫, ফাতহুল কাদিরঃ ৪/২০৮, তিরমিযি শরিফঃ ৩/৩১০, বাদাইয়ুস সানায়েঃ ১/৬৬৮, তাবয়ীনুল হাকাইকঃ ১/১৪০, আহসানুল ফাতাওয়াঃ ৮/৫৫; ৮/৩২, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়াঃ ৫/৮৯, রদ্দুল মুহতারঃ ১/৫৬৬; ১/৪২, আল বাহরুর রাইকঃ ১/৩৮৫, ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাতঃ ২/৬০-৬৬

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

Scroll to Top