আসসালাম আলাইকুম। আমার এলাকায় অনেক বিখ্যাত এক মুফতি সাহেরের একটি খানকাহ আছে। সেখানে একটি মাদরাসা আছে। উক্ত খানকাহতে মহিলাদের জন্য আলাদা মজলিস, ইসলাহী ও ইলমি আলোচনা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১লা মার্চ মহিলাদের একটি এসলাহি মজলিস আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে শবে বারাআত, রমাযান সম্পর্কে আলোচনা হবে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এরকম মজলিস ইসলাম সমর্থন করে কিনা, যায়েজ নাকি নাজায়েজ ?
সমাধানঃ
بسم اللہ الرحمن الرحیم
প্ৰশ্নে উল্লেখিত খানকাহটা যদি শরিয়ত মুতাবিক পরিচালিত হয়, এবং সেখানে কোন শরিয়ত গর্হিত কোন কাজ না হয় ও শরয়ী পৰ্দা লংঘন না হয় এবং দূর দুরান্ত থেকে যে সকল মহিলারা আগমন করেন তারা যদি স্বামী বা মাহরাম পুরুষের সাথে আসেন, তাহলে মহিলাদের দ্ধীনি ইলম অৰ্জনের জন্য দিন নিৰ্ধারন করে এ রকম মজলিস এর ব্যবস্থা করা জায়েয আছে। এবং তা শরিয়ত বিরোধী নয়। তবে ফিৎনা থেকে বাচার জন্য নিজ মহল্লায় এমন মজলিস করা যেতে পারে, দূরে সফর করা মারাত্বক ক্ষতির আশংকা বহন করে, নিশ্চিত ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে এমন সফর জায়েয নেই।
হাদীস শরীফে বৰ্নিত আছে যে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলা সাহাবীদের রা. তালীম তরবিয়াতের জন্য একটি দিন নিৰ্ধারন করেছিলেন, উক্ত মসলিসে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহিলাদেরকে ভিবিন্ন ওয়াজ নসিহত এবং গুরুত্বপূর্ন কাজের আদেশ নিষেধ করতেন।
সুত্রসমূহ
صحيح البخاري: رقم الحديث 101 عن أبي سعيدٍ الخُدريِّ – رضي الله عنه – قال: قالتِ النِّساءُ للنبيِّ – صلى الله عليه وسلم -: غَلَبَنا عليك الرجال، فاجعلْ لنا يومًا من نفسك؛ فوعدهنَّ يومًا لقيهنَّ فيه، فوعظهنَّ وأمرهنَّ
عمدة القاري: 2/124 “قال النووي: فيه استحباب وعظ النسآء و تذكيرهن الآخرة و أحكام الإسلام و حثهن علي الصدقة، و هذا إذا لم يترتب علي ذلك مفسدة أو خوف فتنة علي الواعظ أو الموعوظ و نحو ذلك”
فتاوی محمودیہ: 3/377 الجواب: جائز ہے، حضور اکرم صلی اللہ علیہ وسلم سے بکثرت ثابت ہے، لیکن اگر فتنہ کا اندیشہ ہو تو احتیاط کرنا چاہیے
১. বাচ্চার বমি কি নাপাক? ২. কাপড়ে বমি লাগলে ঐ কাপড় নাপাক? ৩. বাচ্চার কপালে কালো টিপ দেয়া জায়েয? ৩. বাচ্চার জন্য এত কষ্ট মেহনত করা কি ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত? ৪. বাচ্চার লালন-পালনের কষ্টে সবর করলে কি আখিরাতে তার জাযা পাওয়া যাবে?
সমাধানঃ
بسم اللہ الرحمن الرحیم
১. বাচ্চার বমি নাপাক।
২. (ক) কাপড়ে বমি লাগলে কাপড় নাপক হয়ে যাবে, কারন বমি নাপক। (খ) কাপড়ে নাপাক লেগেছে কিন্তু তা শুকিয়ে যাওয়ার কারনে নিশ্চিত ভাবে ঐ নাপাকের জায়গা বোঝা যাচ্ছেনা, তাহলে এ ক্ষেত্ৰে পুরা কাপড়টাই ধৌত করতে হবে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন যে, ان خفي عليه مكانه و علم انه قد اصابه. غسل الثوب كله অর্থঃ যদি নাপাকীর জায়গা অজ্ঞাত হয়ে যায় তবে নিশ্চিত ভাবে জানা থাকে যে কাপড়ে নাপাক লেগেছিল, তাহলে পুরো কাপড় ধৌত করতে হবে। (গ) সর্বদা পবিত্ৰ কাপড় পরিধান করা উত্তম এবং তা শরীয়তে অনেক পছন্দনীয় আমল, তবে প্ৰশ্নোক্ত ক্ষেত্ৰে যেহেতু আপনার বারবার কাপড় পরিবর্তন করা কষ্টকর হচ্ছে, সে ক্ষেত্ৰে আপনি নামাযের জন্য পাক পবিত্ৰ এক জোড়া কাপড় রেখে দিবেন, নামাযের সময় হলেই ঐ পাক পবিত্ৰ কাপড় পড়ে নামায পড়বেন, তারপর আপনি অন্যান্য সময় অন্য কাপড় পরিধান করতে পারেন।
৩. বাচ্চাদের কপালে কালো টিপ দেওয়া জায়েয নেই, এটি নিছক কু-সংস্কার ছাড়া কিছু না, একজন মুসলিম হিসাবে এ জাতীয় কু-সংস্কার পরিহার করা উচিৎ, কারন এটি হিন্দুদের প্ৰথা ও সাংস্কৃতি। দ্বিতীয়তো এটি বদ নজরকে রোধ করতে পারেনা। শিশুকে বদ নজর ইত্যাদি থেকে রক্ষা করার জন্য কি করতে হবে রসুল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা শিক্ষা দিয়েছেন, হাদীসে এসেছে রসুল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত হাসান ও হুসাইন রা. এর জন্য এই দুআ করতেন اعيذ كما بكلمات الله التامة من كل شيطان و هامة ومن كل عين لامة
অন্য হাদীসে বর্নিত হযরত জিব্ৰাঈল আঃ কর্তৃক রসুল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ঝাড়-ফুকের দুআ দ্বারাও শিশুকে ঝাড় ফুক দেওয়া যেতে পারে, আয়াতুল কুরসী এবং সুরা নাস-ফালাক, ইখলাস পড়েও শিশুকে বদ নজর থেকে রক্ষার জন্য ঝাড়-ফুক দেওয়া যেতে পারে।
৪+৫. সন্তান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নিয়ামত এবং পিতা মাতার নিকট আমানত, পিতা মাতার কর্তব্য হলো সন্তানকে আল্লাহর ফরমাবরদার বান্দা হিসাবে গড়ে তোলা, শয়তানের সব ধরনের গোলামী থেকে দুরে রাখা, শয়তান চায় প্ৰততেকটা মানব শিশুকে অংকুরেই ধ্বংস করতে, সুতরাং শয়তান যেন মানব শিশুকে পথ ভ্ৰষ্ট করতে না পারে। এই জন্য পিতা মাতার দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো সন্তানকে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করে প্ৰকৃত মানুষ রুপে তৈরী করে যাওয়া। আর এ ক্ষেত্ৰে যদি কোন ধরনেন অবহেলা/কমতি দেখা যায় তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার কাছে জওয়াবদিহি করতে হবে।
মোটকথা সন্তান-সন্ততি পিতা মাতার নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে আমানত, তাদের ঈমান-আকিদা, বোধ-বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা, আমল-আখলাক, জীবন-যাপন প্ৰভৃতির ব্যাপারে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়া মাতা-পিতার কর্তব্য। আর এই কর্তব্য পালন করতে যেয়ে সন্তান-সন্ততিকে (লালন পালন করতে যেয়ে) যত শ্ৰম-সাধনা, মেহনত-মুজাহাদা এবং অর্থ-পয়সা খরচ করবে তা (ইবাদত) তথা সাদকাহ এর অন্তর্ভুক্ত। এবং তাতে সদকাহ এর সাওয়াব পাওয়া যাবে, আখিরাতে নাজাতের উসিলা হবে, সন্তান-সন্ততির জন্য যা খরচ করা হয় তা সর্বশ্ৰেষ্ট দান, হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্নিত, এক হাদীসে নবী করিম সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তুমি একটি দিনার আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছ, একটি দিনার দাস মুক্তির কাজে ব্যায় করেছ, একটি দিনার মিসকিনকে দান করেছ, আর একটি দিনার তোমার পরিবারের জন্য খরচ করেছ, এর মধ্যে যে দিনারটি তুমি তোমার পরিবারের জন্য খরচ করেছ তার সাওয়াব বেশী। আম্মাজান হযরত আইশা রা. থেকে বর্নিতঃ সন্তান-সন্ততির প্ৰতি অনুগ্ৰহ করলে জান্নাত লাভ হয় এবং জাহান্নাম হারাম হয়ে যায়। হযরত আবু উমামাহ রা. থেকে বর্নিতঃ রসুল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ অনিষ্টতা ও খারাপ থেকে বেচে থাকার জন্য যে ব্যাক্তি নিজের জন্য খরচ করল তা তার জন্য সাদকাহ, এবং যে ব্যাক্তি নিজ স্ত্ৰী, সন্তান-সন্ততি ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য কিছু খরচ করল তা তার জন্য সাদকাহ হিসাবে পরিগনিত হবে।
সুত্রসমূহ
الفتاوي الهنديية: الصبي اذا قاء على ثدي .الام ثم مصي الثدي مرارا الخ. كل ما يخرج مم بدن الانسان مما يوجب خروجه الوضوء او الغسل فهو مغلظ كا الغايط و البول
المصنف ابن ابي شيبة: رقم 906
البحر الرايق: لان الثوب والبدن لا يطهران بالدلك الا في المني لان الثوب لتخلخله يتداخله كثير من اجزاء النجاسة فلا يخرجها الا الغسل
البدايع الصنايع: 1/236
الفتح القدير: 1/168
الفتاوى التاترخانية: 1/467
سنن ابي داؤد: رقم 4737
الصحيح البخاري: رقم 3371
الصحيح المسلم: رقم 2186
الصحيح البخاري: رقم 5351-54 قال رسول الله صلي: اذا انفق المسلم نفقة علي اهله و هو يحتسبها كانت له صدقة
আসসালামু আলাইকুম। হযরত, আমার একটি প্রশ্ন ছিল দয়া করে আমার প্রশ্ন এর উত্তর প্রদান করবেন যাতে করে সঠিক নিয়ম জানতে পারি। প্রশ্ন হলোঃ ঘুমানোর সময় স্ত্রীর ডান পাশে স্বামী ঘুমাবে, এরকম কোন বিধান শরীয়তে আছে কি?
সমাধানঃ
بسم اللہ الرحمن الرحیم
ঘুমানোর সময় স্ত্রীর ডান পাশে স্বামী বা স্বামীর ডান পাশে স্ত্রী ঘুমাবে, এ ধরনের কোন নিয়ম ইসলামী শরিয়তে নাই।
খুব সম্ভবত এটি হিন্দুয়ানী কোন প্রথা হতে পারে, ইসলাম কোন প্রথা সমর্থন করে না।
তবে একজন মুসলমান সে নারী হোক পুরুষ ঘুমানোর সময় অবশ্যই নিজ ডান কাতে শয়ন করবে, কেননা এটা রসুলুল্লাহ সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশ ও সুন্নত।
মাসতুরাত জামাআত বা নারীদের দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ করা কেমন? জানতে চাই!
সমাধানঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
মাসতুরাত জামাআত নাজায়েয সম্বন্ধে বিশ্ব বিখ্যাত দারুল উলুম দেওবন্দ এর প্রকাশিত একটি ফতওয়া নিচে দেয়া হলো। উল্লেখ্য যে, নিম্নক্ত ফতওয়ার সাথে রহমানিয়া ইমদাদুল উলুম মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় ফাতওয়া বিভাগের মুফতি সাহেবগন একাত্বতা পোষন করছেন।
“প্রশ্ন : সম্মানিত মুফতি সাহেব, আমাকে একটি কথা বুঝিয়ে দিন যে, নারীদের জন্য ৩ দিনের জন্য, ৪০ দিনের জন্য বা ১০ দিনের জন্য নিজের মাহরামের সাথে জামাতে যাওয়া কেমন? শরিয়ত কি ইহার অনুমতি দিয়েছে? পবিত্র হাদীস এবং সাহাবায়ে কেরাম রাঃগনের আমল দ্বারা প্রমাণিত কি? বিস্তারিত জানালে ভাল হয়!
উত্তরঃ নারীদের দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করা সম্পর্কে দারুল উলুম দেওবন্দ ও মাজাহিরুল উলুম সাহারানপুরের সর্বসম্মতিক্রমে, সম্মিলিত ফতওয়া নিচে দেয়া হল৷
নারীদের দাওয়াত ও তাবলীগের সফর করা সম্পর্কে হযরত মাওলানা মুফতি সায়্যিদ মাহাদী হাসান রহঃ (সদর মুফতি, দারুল উলুম দেওবন্দ) এর ফতওয়া, হযরত মাওলানা মুফতি সাঈদ আহমদ রহঃ (মুফতিয়ে আজম, মাজাহিরুল উলুম সাহরানপুর) ও হযরত মাওলানা আব্দুল লতিফ রহঃ (নাযিমে আ’লা, মাজাহিরুল উলুম সাহরানপুর) এর পরিপুর্ন সমর্থন ও সত্যায়ন৷
প্রশ্ন : উলামায়ে দ্বীন এবং শরীয়তের যোগ্য মুফতি সাহেবগণ, নারীদের মাহরামের সাথে দাওয়াত ও তাবলীগের সফর করার ব্যাপারে কি বলেন?
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম রাঃ এবং তাবেঈন রহঃগনের জামানায় নারীরা তবলিগের জন্য সফর করতেন না, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম রাঃ নারীদেরকে তাবলীগের জন্য কোথাও সফর করার নির্দেশ দেননি, এবং নিজেরাও নারীদেরকে তাবলিগের জন্য সফরে পাঠাননি, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম রাঃগনের এই আমল থেকে প্রমাণিত হয় যে, নারীদের দাওয়াত ও তাবলীগের জন্য সফর করা জায়েয নেই৷ খইরুল কুরুনে যখন নারীদের কোন মাসআলা-মাসাইল জানার প্রয়োজন হতো, তখন তারা রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মানিতা স্ত্রীগণ ও সাহাবায়ে কিরাম রাঃগনের স্ত্রীদের থেকে জেনে নিতেন, ওই জামানায় তাবলীগ শুধু পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট-নির্ধারিত ছিল, নারীরা পর্দার সাথে শরীয়তের আহকাম সমূহ জেনে, দ্বীনী বিষয় সমূহ শিক্ষা করতো, পুরুষদের কাজ ছিল, নিজে দ্বীনী বিষয়ে যতটুকু জ্ঞানী, তা স্ত্রীগণকে জানাতেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম রাঃগণ তাবলীগের জন্য সফর করতেন, জিহাদে যেতেন, কিন্ত ব্যাপকভাবে নারীদেরকে নিজেদের সাথে সফরে নিয়ে যেতেন না, খইরুল কুরুনেই যদি এই অবস্থা! তাহলে এই ক্ষতিকর ও ফিতনার যামানায় তাবলিগের জন্য সফর করা, যদিও তা মাহরামের সাথেই হোকনা কেন? কি ভাবে যায়েজ হতে পারে? এ ধারনা মনে আনা যে, তাহলে নারীদের জন্য তাবলিগ কিভাবে করতে হবে? এই ভিত্তিতে তাদের জন্য তাবলিগ শুদ্ধ নয় যে, তাদের পুরুষেরা তাদের তাবলিগ করবে, তাদেরকে দ্বীনের আহকাম সমূহ শিক্ষা দিবে, এবং পুরুষ নিজে দ্বীনি বিষয় সমূহ যারা জানেন তাদের থেকে শিখবে, এবং নিজে শিক্ষা করা ও অন্যকে শিক্ষা দেয়ার জন্য সফর করবে, অন্যথায় নারীদের তাবলিগের জন্য ব্যাপকভাবে সফর করা, ফেতনার দরওয়াজা সমূহ খুলে দেয়ার মতো, যা বর্তমানে দুনিয়াব্যাপি সুদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যাক্তিরা প্রত্যক্ষ্য দেখতে পারছেন৷
উপরক্ত ফতওয়া সঠিক : পরিপুর্ন সমর্থন ও সত্যায়নে : হযরত মাওলানা মুফতি সাঈদ আহমদ রহঃ (মুফতিয়ে আজম, মাজাহিরুল উলুম সাহরানপুর), ও হযরত মাওলানা আব্দুল লতিফ রহঃ (নাযিমে আ’লা, মাজাহিরুল উলুম সাহরানপুর)
নোটঃ উপরোক্ত দুই হযরাতের সমর্থন ও সত্যায়ন, মাজাহিরুল উলুম সাহারানপুর এর দারুল ইফতায় সংরক্ষিত!
—মুফতি হাবিবুর রহমান খয়রাবাদী দাঃ বাঃ, তারিখ : ২৩/০৩/১৪৩২ হিঃ
ফতওয়াটি যেভাবে নকল করা হয়েছে তা সম্পুর্ন সঠিক, সত্যায়নেঃ মুফতি জয়নুল ইসলাম কাসেমী দাঃ বাঃ, নায়েবে মুফতি, দারুল উলুম দেওবন্দ৷ তারিখ : ২৮/১১/৩২ হিঃ
প্রশ্ন : আমি কি আমার স্ত্রীকে নিয়ে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে যেতে পারব? নারীদেরকে দাওয়াত ও তাবলীগে নিয়ে যাওয়া উচিত কিনা? এ ব্যাপারে উলামায়ে দ্বীন কি বলেন?
উত্তর : حامدا و مصليا و مسلما, নারীদেরকে জামায়াতে নিয়ে যাওয়া দাওয়াত ও তাবলীগের উদ্দেশ্য এবং পছন্দনীয় নয়, এবং و اثمهما اكبر من نفعهما (সুরা বাকারা, আয়াত ২১৯) এর মতো, আর নারীরা অনেক ক্ষেত্রে বেপরোয়া হয়ে থাকে৷ فقط
উপরে উল্লেখিত ফতওয়া ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দারুল ইফতার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নারীদের তাবলীগের নাম দিয়ে ঘরের বাইরে ছেড়ে দেওয়া শরীয়ত সম্মত হবে না৷ নিজ ঘরে মহিলাদের তা’লিম করাই মহিলাদের জন্য দাওয়াতের কাজ৷ ঘরের বাইরে গিয়ে তা’লিম করাকেও শরীয়ত সমর্থন করেনা বিধায় তা বর্জনীয়৷
প্রশ্নঃ মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা, মহিলা মাদরাসায় পড়া বা সমর্থন করা সম্বন্ধে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হবো!
উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم
দৈনন্দিন জীবন যাপন করার মত ইসলামী শিক্ষা অর্জন করা প্রত্যেক নর-নারীর উপর ফরজে আঈন৷ তবে কুরআন-হাদীসের গভীর জ্ঞান তথা শরীয়তের উপর অভিজ্ঞতা অর্জন মুসলিম মিল্লাতের যেকোন সমস্যার সমাধান দেওয়ার মতো উচ্চশিক্ষা গ্রহণ প্রত্যেক যুগে একদল মুসলমানের ওপর ফরজে কিফায়া৷ এ উচ্চশিক্ষা গ্রহণের দায়িত্ব চৌদ্দশত বছর যাবত পুরুষগনই আঞ্জাম দিয়ে আসছেন৷ শরীয়তের আলোকে এ দায়িত্ব কোন মহিলাকে দেওয়া হয়নি৷ এ কারণে ইসলামের সোনালী যুগ থেকে হাজার বছর পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষা অর্জনের জন্য পুরুষদের অসংখ্য মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হলেও মহিলাদের কোন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়নি৷
আকাবিরগন দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করেছেন, কিন্ত শুধু নারীদের জন্য আলাদা কোন শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেননি। সত্যই এটার প্রয়োজন হলে অবশ্যই তারা মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করতেন। অনেকে শর্ত-সাপেক্ষে জায়েয বললেও এই ফিৎনার যুগে সকল শর্ত মানা সম্ভব নয় বলে আকাবিরে উলামা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
সুতরাং নারীদের জন্য ইসলামী শিক্ষা ঐ পদ্ধতিতেই হওয়া উচিত, যেটা ইসলামী সোনালী যুগ থেকে এ পর্যন্ত চলে আসছে৷ অপ্রাপ্ত বয়সে পিতার বাড়িতে ফোরকানিয়া মক্তবে শিখবে আর বিবাহের পর স্বামীর দায়িত্বেই তার প্রয়োজনীয় ইলম হাসিল করবে৷
প্রয়োজনে নারীর কোন মাহরাম ব্যক্তি অন্য কোন মাহরাম যিনি আলেম হবেন, অথবা দ্বীনি ইলম সম্বন্ধে অভিজ্ঞ নারী থেকে বর্তমানে ইচ্ছা করলেই খুব সহজে প্রয়োজনীয় ইলম হাসিল করতে পারবে। এজন্য সর্বচ্চ অনাবাসিক বালিকা মাদরাসা প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া যেতে পারে যেখানে নারীরা সকালে এসে বিকালে চলে যাবে।
বর্তমানে সাবালিকা মহিলাদের জন্য পুরুষ শিক্ষকের মাধ্যমে আবাসিক মাহরাম বিহীন বসবাসের মাধ্যমে মহিলা মাদ্রাসার যে প্রচলন ঘটেছে, তা কোন পর্দানশীন ইসলামিক আদর্শবান নারীর কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না৷ যার কারণে দারুল উলুম দেওবন্দসহ পুরো বিশ্বের বিচক্ষণ, অভিজ্ঞ মুফতিগণ প্রচলিত মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, সেথায় অধ্যয়ন করা ও এর সাথে সম্প্রিক্ত থাকাকে দ্বীনী খিদমাত বলে ফতওয়া দেননি৷ এজন্য ফিৎনার এই যুগে মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা, মহিলা মাদরাসায় পড়া বা সমর্থন করা শরীয়ত সমর্থন করে না বিধায় তা পরিত্যাজ্য।
প্রশ্নঃ মাদরাসা মসজিদে মাসআলা-মাসাইল শিক্ষা অর্জন করা, যেমন শুনেছিঃ একটি মাসাআলা শিক্ষা করলে ১ হাজার নফল নামাজ এর সওয়াব, এটা ঠিক আছে তো?
উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে আছে দ্বীনি ইলম এর একটি অধ্যায় শেখা ১ হাজার রাকাআত নফল নামাজের চেয়ে উত্তম, আর মাসআলা-মাসাইল শিক্ষা করা দ্বীনি ইলম শিক্ষা করার অন্তর্ভুক্ত, তাই ইখলাসের সাথে মাসআলা-মাসাইল শিখলে উল্লেখিত ফজিলত পাওয়ার আশা করা যায়।