তালাক ও খুলা

তিন তালাকের পর দ্বিতীয় বিবাহে সহবাস না করলে হালালা বৈধ হবে?

ফতওয়া কোডঃ 187-তাখু,বি-05-09-1444

প্রশ্নঃ

হুজুর আমার একটা প্রশ্ন, এক ভাই তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছে এবং তালাকের পাঁচ মাস পর ঐ স্ত্রীকে দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে অন্য এক ছেলের সাথে বিয়ে পড়াইছে। বিয়ে পড়ানোর ২০ মিনিট পর সেই ছেলেটি তাঁকে তিন তালাক দিয়েছে তার সাথে সহবাস বা মেলামেশা হয়নি। এর পর আবার নতুন করে তিন মাস দশ দিন ঐ মেয়েটি ইদ্দত পালন করে আগের স্বামীর সাথে বিয়ে পড়ানো হয়েছে এবং সংসার করছে। এখন জানার বিষয় হলো, এটা জায়েজ হবে কিনা এবং তারা স্বামী-স্ত্রী কি এর কারণে কিয়ামতের দিন যেনার কাতারে দাঁড়াবে কি না?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

যদি কোনো কারণে স্বামী তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আর কোন সম্পর্ক বাকি থাকে না, তালাক দেয়ার সাথে সাথেই উভয়েই আলাদা হয়ে যাওয়া জরুরী। তবে যদি স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পরেও উক্ত স্ত্রীকে নিতে চায় তাহলে শরীয়ত সম্মত হালালা করা যেতে পারে।

শরীয়ত সম্মত হালালা হলঃ প্রথম স্বামীর তালাক পতিত হওয়ার পর তালাকের ইদ্দত পালন করতে হবে, ইদ্দত পালন শেষ হলে যদি তালাকপ্রাপ্তা নারীর অন্য কোথাও বিবাহ হয় (শুধু নামে বিবাহ নয় বরং সহবাস জরুরী) এবং দ্বিতীয় স্বামীর সাথে যে কোন কারণে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়, যেমন হয়তো দ্বিতীয় স্বামী ইন্তেকাল করেছেন, অথবা যে কোন কারনে দ্বিতীয় স্বামীও উক্ত নারীকে তিন তালাক দিয়ে দিয়েছেন, এক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্বামীর তালাক দেওয়ার পর উক্ত তালাকের ইদ্দত পালন করার পর চাইলে প্রথম স্বামী উক্ত নারীকে বিবাহ করতে পারে।

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী প্রথম স্বামী তিন তালাক দেওয়ার পর অন্য আরেকজনের কাছে নামমাত্র বিবাহ (দ্বিতীয় স্বামীর সাথে সহবাস ছাড়া) পড়িয়ে দ্বিতীয় স্বামী ২০ মিনিট পর যে তালাক দিয়েছে, এটার কারণে উক্ত নারীর উপর তিন তালাক পতিত হয়েছে ঠিক কিন্তু সহবাস না করার কারণে প্রথম স্বামীর জন্য দ্বিতীয় স্বামীর তালাকের ইদ্দতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও প্রথম স্বামীর বিবাহ করা বৈধ হয়নি। কেননা এখানে দ্বিতীয় স্বামীর সাথে সহবাস না কারর কারনে শরীয়ত সম্মতভাবে হালালা হয়নি। প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যদি তারা এখনো একসঙ্গে জীবন যাপন করছে, এটা তাদের জন্য সম্পুর্ন হারাম ও জেনার শামিল এবং যত দ্রুত সম্ভব বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া জরুরি, এবং সত্য দিলে তওবা ইস্তেগফার করে আল্লাহ তাআলার কাছে মাফ চাওয়া জরুরি।

সুত্রসমূহ

سورۃ البقرۃ: 230 فَإِنْ طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِنْ بَعْدُ حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ

فتاوی ہندیۃ: 1/473 وَإِنْ كَانَ الطَّلَاقُ ثَلَاثًا فِي الْحُرَّةِ وَثِنْتَيْنِ فِي الْأَمَةِ لَمْ تَحِلَّ لَهُ حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ نِكَاحًا صَحِيحًا وَيَدْخُلَ بِهَا ثُمَّ يُطَلِّقَهَا أَوْ يَمُوتَ عَنْهَا، كَذَا فِي الْهِدَايَةِ”

الصحیح لمسلم: 533 عن عائشة قالت جاءت امرأة رفاعة إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقالت  كنت عند رفاعة فطلقني فبت طلاقي فتزوجت عبد الرحمن بن الزبير وان ما معه مثل هدبة الثوب فتبسم رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال أتريدين أن ترجعي إلى رفاعة ؟لا حتى تذوقي عسيلته ويذوق عسيلتك

الھدایۃ: 2/409 ان كان الطلاق ثلاثا في الحرة او ثنتين في الامة لم تحل له حتی تنكح زوجا غيره نكاحا صحيحا ويدخل بها ثم يطلقها او يموت عنها

و الله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

স্ত্রী বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী স্বামীকে ডিভোর্স দিলে তা শরিয়াহ অনুযায়ী তালাক হবে কি?

ফতওয়া কোডঃ 157-তাখু-26-09-1443

প্রশ্নঃ

স্ত্রী বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী স্বামীকে ডিভোর্স দিলে তা শরিয়াহ অনুযায়ী তালাক হবে কি না?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

ইসলামী আইনে তালাক দেয়ার অধিকার শুধু স্বামীকে দেয়া হয়েছে, তাই স্ত্রী তালাক দিলে তালাক হবে না। তবে বিবাহ বা পরবর্তী কোন সময়ে স্বামী যদি তার স্ত্রীকে তার নিজের ওপর তালাক নেয়ার অধিকার প্রদান করে, এবং সে হিসেবে স্ত্রী স্বামীর প্রদত্ত অধিকারের ভিত্তিতে নিজের ওপর তালাক নিয়ে নেয় তাহলে তালাক হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য যে, কাবিননামার সব শর্ত মেনে নিয়ে স্বাক্ষর করার দ্বারাও স্ত্রীকে অধিকার প্রদান হয়ে যায়। প্রশ্নোক্ত সুরতে কাবিননামার ১৮নং ধারার ভিত্তিতে অথবা অন্য কোনো ভাবে স্বামীর প্রদত্ত অধিকারের ভিত্তিতে স্ত্রী যদি ডিভোর্স দেয় তাহলে তালাক হয়ে যাবে।

সুত্রসমূহ

رسورة الأحزاب: 28-29 يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا فَتَعَالَيْنَ أُمَتِّعْكُنَّ وَأُسَرِّحْكُنَّ سَرَاحًا جَمِيلًا * وَإِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالدَّارَ الْآَخِرَةَ فَإِنَّ اللَّهَ أَعَدَّ لِلْمُحْسِنَاتِ مِنْكُنَّ أَجْرًا عَظِيمًا

صحيح البخاري: رقم 4885 عن عائشةَ رَضِيَ الله عنها قالت: خَيَّرَنا رسولُ الله صلَّى اللهُ عليه وسلَّم، فاختَرْنا اللهَ ورَسولَه، فلم يَعُدَّ ذلك علينا شَيئًا

الموسوعة الفقهية: يَصِحُّ للزَّوجِ أن يُفَوِّضَ امرأتَه في الطَّلاقِ، وذلك باتِّفاقِ المَذاهِبِ الفِقهيَّةِ الأربَعةِ: الحَنَفيَّةِ، والمالِكيَّةِ، والشَّافِعيَّةِ، والحَنابِلةِ، وحُكي فيه الإجماعُ

الفتاوى الهندية: 1/387

الحيلة الناجزة: رقم 40

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

যে কোন অবস্থায় তালাক পতিত হয়!

ফতওয়া কোডঃ 131-তাখু-05-06-1443

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম। হযরত আমাদের পাশের মহল্লায় স্বামী স্ত্রী ঝগড়া করে স্বামী রাতে স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে দেয়, পরে ইমাম সাহেবকে অবিহিত করলে তিনি তাদেরকে তওবা করিয়ে কিছু আর্থিক জরিমানা করে তাদেরকে মিল করে দেয় (ইমাম সাহেব দাওরা ফারেগ)। পরে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কি ভাবে এটা ফায়সালা করলেন, তিনি আমাকে বললেন যে ঝগড়া করে তালাক দিলে তালাক হয় না, আমি বললামঃ না, তালাক ঝগড়া করে দিলেও হয়, নেশা করে দিলেও হয়, লিখে রাখলে তাও হয়, তখন একটা হাদিস শুনাইলেন যে, এক সাহাবি তার বিবিকে তিন তালাক দেয় আর ওই মহিলা সাহাবির বিয়ে হয়ে যায়। কিছুদিন পরে ওই মহিলা সাহাবি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে অভিযোগ করেন তার স্বামী পুরুষত্বহীন তখন রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তুমি কি আগের স্বামীর কাছে জেতে চাও মহিলা সাহাবি বলেন জি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন না যতক্ষন না তুমি বিবাহের মজা উপভোগ করতে পারবেনা ততক্ষন তুমি তোমার আগের স্বামীর কাছে যেতে পারবে না। এর পর ওই মহিলার আগের স্বামী রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছ এসে বলেন আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে নিতে চাই রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন যাও তাকে নিয়ে সংসার করো তখন ওই সাহাবি বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি আমার বিবিকে তিন তালাক দিয়েছি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তাকে নিয়ে যাও। এখানে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের আবেগ দেখেছেন, তাই আমি তাদের আবেগ দেখে ফায়সালা করেছি, আমার জানার বিষয় হলো এই ফায়সালা কি শরিয়ত সম্মত হয়েছে? বর্তমান স্বামী স্ত্রী এক সাথে আছে তাদের একসাথে থাকা কি শরিয়াত স্বম্মত?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

আপনার বর্ণনা অনুযায়ী জানা গেল যে, স্বামী স্ত্রী ঝগড়া করে স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন, পরে এলাকার ইমাম সাহেব তাদের মধ্যে সমঝোতা করে দিয়েছেন, এরপর থেকে তারা একত্রে রয়েছেন।

এটার সমাধান হলো, প্রথমত স্বামী স্ত্রী ঝগড়া করে স্বামী কিভাবে তালাক দিয়েছেন? স্বামী-স্ত্রীর সত্যায়নকৃত তালাকের বিবরণ আমাদের হাতে আসতে হবে। ইমাম সাহেব যে সমাধান দিয়েছেন, সত্যি যদি স্বামী স্ত্রীকে এমনভাবে তালাক দিয়ে থাকেন যে, উক্ত স্ত্রীকে পুনরায় গ্রহণ করা শরীয়ত সম্মত নয়, এমতাবস্থায় উক্ত ইমামের সমাধান গ্রহণযোগ্য নয়। মনে রাখতে হবে ঝগড়ার সময় তালাক দিলেও তা পতিত হয়, যেহেতু তালাকের মাসআলা, বিষয়টির গুরুত্ব দিকে লক্ষ রেখে, পরিপূর্ণ সমাধান হওয়া পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীর একত্রে থাকা জায়েজ হবে না। স্বামী স্ত্রী কর্তৃক সত্যায়িত নিজেদের তালাকের বিবরণ এর লিখিত কপি (তৃতীয় আরেকজন দ্বীনদার ব্যক্তির সাক্ষীসহ), আমাদের দারুল ইফতায় প্রেরন করলে তখন আমরা সমাধান দেয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

সুত্রসমূহ

السنن الترمذي: 3/319 رقم 1184 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ وَالطَّلاَقُ وَالرَّجْعَةُ

الدر المختار: 3/235

فتاوى حقانية: 4/453

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

স্ত্রী স্বামিকে তালাক দিতে পারবে?

ফতওয়া কোডঃ 79-হউ-07-02-1443

প্রশ্নঃ কারো স্ত্রী তার স্বামিকে তালাক দিতে পারবে কি?

উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم

কোন স্ত্রী তার স্বামিকে তালাক দিতে পারবে না।

সূত্রঃ সুরা নিসাঃ ৩৪, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ১/৬৭২, রদ্দুল মুহতারঃ ৩/৩১৫, ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাতঃ ৬/৩৭২-৩৭৩

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

স্বামী নিখোজ হলে করনীয়

ফতওয়া কোডঃ 14-তাখু,নামা,বি-14-08-1442

প্রশ্নঃ

১. আমার মেয়ে সুরাইয়া ইয়াসমিন কে ২০১৬ ইং নভেম্বর মাসে আব্দুল আউয়ালের সাথে বিবাহ দেওয়া হয়। গত ১৭ই জুলাই ২০১৮ ইং থেকে আমার মেয়ের জামাই নিখোজ হয়। আমার বিয়াইয়ের সাথে যোগাযোগ করলে বিয়াই বলে যে, তাদের সাথে ছেলের কোন যোগাযোগ নেই, তারা আশংক্ষা করছে তাদের ছেলেকে পাওনাদাররা মেরে ফেলছে ,তাই তারা আমার মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিতে বলছে। এমতাবস্থায় আমার উপর শরিয়তের কি হুকুম, তা জানালে উপকৃত হব।

২. মোসাঃ সুরাইয়া ইয়াসমিন পিতাঃ মোঃ রুহুল আমীন আমার স্বামী আব্দুল আউয়াল (শাওন) গত ১৭ই জুলাই ২০১৮ ইং নিখোজ হয়। আমার শশুর শাশুড়ী আমার পিতাকে জানিয়ে দিয়েছে যে, আপনার মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দিন। একাকী ছবর করা আমার জন্য কষ্ট হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমার উপর শরিয়তের মাসআলা কি? ফায়ছালা জানালে উপকৃত হব।

সমাধানঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

স্বামী নিখোজ হওয়ার পর স্ত্রী কতদিন অপেক্ষা করবে এই ব্যাপারে ইমামদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মতে ৯০ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। তবে এই মাসআলায় হানাফী মাযহাবের উলামায়ে মুতাআখরীন ইমাম মালেক রহঃ এর মাযহাবের উপর ফতোয়া দিয়েছেন। এর বিস্তারিত বিবরণ হলোঃ স্বামী নিখোজ হওয়ার পর সংবাদটি মুসলিম কাযীর নিকট গিয়ে স্ত্রী পেশ করবে। এবং তার সাধ্যনুযায়ী নিখোজ স্বামীকে তালাশ করার পর যদি না পায়,তাহলে কাযী স্ত্রীকে চার বছর অপেক্ষা করার জন্য নির্দেশ দিবে। যদি এর মধ্যে ফিরে এসে যায় তাহলে ভালো। আর যদি ফিরে না আসে তাহলে কাযী তার স্বামীর মৃত্যুর হুকুম দিবে। কেননা, হযরত ওমর ফারুক রাঃ বলেন, নিখোঁজ স্বামী জন্য স্ত্রী চার বৎসর পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। হযরত ওমর, ওছমান, আলী এবং অনেক তাবেয়ী থেকেও অনুরূপ ফতওয়া রয়েছে । অতপর স্ত্রী ইদ্দত পালন করে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে। স্ত্রী দ্বিতীয় জায়গায় বিবাহ করার পর যদি হঠাৎ প্রথম স্বামী ফিরে আসে, তাহলে উক্ত মহিলা দ্বিতীয় স্বামীর নিকট থাকা জায়েয হবেনা। কেননা প্রথম স্বামী ফিরে আসার কারণে দ্বিতীয় বিবাহ বাতিল হয়ে যায়। অতপর ২য় বিবাহ বাতিল হবার কারণে ইদ্দত পালন করতে হবে। ইদ্দত পালন করার পর উক্ত মহিলা প্রথম স্বামীর স্ত্রী হবে। উল্লেখ্য যে,ইদ্দতের নিয়ম হচ্ছে- স্ত্রী গর্ভবতী না হলে মৃত বা নিখোজ স্বামীর জন্য স্ত্রী চার মাস দশদিন ইদ্দত/ শোক পালন করবে। আর গর্ভবতী হলে সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত ইদ্দত পালন করবে। ইদ্দত পালনের অর্থ হল, স্বামী-স্ত্রী যে ঘরে বসবাস করত, উল্লেখিত সময় অতিবাহিত হওয়া পর্যন্ত ঐ ঘরেই তাকে অবস্থান করতে হবে। চিকিৎসা বা জীবিকার প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বাইরে বের হওয়া জায়েয নয়। সুতরাং ইদ্দত অবস্থায় কোথাও বেড়াতে যাওয়া, রোগী দেখতে যাওয়া বা কোন অনুষ্ঠানে যাওয়া নাজায়েয ও হারাম। তাছাড়া ইদ্দত শেষ হওয়া পর্যন্ত কোনো রকম সাজ-সজ্জা গ্রহণ করাও নিষেধ। কাজেই ইদ্দত শেষ হওয়া পর্যন্ত অলংকার পরা, হাতে মেহেদী লাগানো, আতর বা খুশবু লাগানো, সাজগোজের কাপড় পরা, চিকন দাঁতের চিরুনী দ্বারা চুল আঁচড়ানো বা এ ধরনের যত সাজ-সজ্জা মহিলারা করে থাকে তা সবই নিষেধ। এ অবস্থায় একদম সাদাসিধা থাকা জরুরী। এমনকি পান খাওয়ায় অভ্যস্ত থাকলে তা খেয়ে ঠোট লাল করা যাবে না।

সূত্রসমূহ

سورة البقرة: 234

اللباب في شرح الكتاب: 5-6

سنن البيهقي: رقم 15345-15348

المهلة: 9/316-324

مصنف عبد الرزاق: رفم 12325

احسن الفتاوى: 5/467

فتاوى محمودية: 16/342

رد المحتار: 4/295-296

شرح المنهاج على مختصر الخليل: 2/375

شرح الصغير: 2/694

حاشية الدسوقي: 2/479

منار السبيل: 2/88

الدر المختار: 3/510-511-531

الهداية: 2/423, 3/427

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading