আখলাক ও আদাব

হেফজখানায় ছাত্ররা যদি কুরআনে কারিম নিচে রেখে বসে ও উস্তাদ উপরে বসে?

ফতওয়া কোডঃ 184-আআ,কুকা-06-08-1444

প্রশ্নঃ

আমার জানার বিষয় হলোঃ আমাদের দেশের হেফজখানাগুলোতে দীর্ঘ সময় বসে বসে ছাত্রদের পড়া শুনতে হয়। এ অবস্থায় কোনো কোনো ওস্তাদ বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে পারে না। আবার বসে থাকলেও অনেক কষ্ট করে বসে থাকে। আবার অনেকে এমন দীর্ঘ সময় বসে ক্লাস নিতে হয় বিধায় হেফজখানায় খেদমতই করতে চায় না। আমরা যারা করি আমাদের বেশির ভাগই এর বিকল্প পদ্ধতি খুঁজে থাকি।

এমতাবস্থায় আমাদের হেফজ ক্লাসগুলোতে যদি ওস্তাদদের জন্য এমন চেয়ার টেবিলের ব্যবস্থা করা হয়‌। যা ওয়ালের সাথে মিলানো বা এমন ভাবে বানানো যার সকল দিক থেকেই আটকানো থাকবে, কোনো পার্শ্ব ফাঁকা থাকবে না। ওস্তাদদের নিতম্ব পা সহ সিনা পর্যন্ত আটকানো থাকবে ওস্তাদ ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিবে, কোনো পার্শ্ব থেকে কোনো প্রকার ফাঁকা থাকবে না। অর্থাৎ সম্পূর্ণ ঘেরাও করা থাকবে যাতে তার পা, নিতম্ব দেখা না‌ যায়। যখন কোন ছাত্র পড়া শুনাবেন সে টেবিলের বাহিরে দাড়িয়ে বা বসে শুনাবে।

উল্লিখিত সুরতে টেবিল থেকে ৩/৪ ফিট দূরে (সামনে বা পাশে)বসে অথবা একেবারে পাশে বসে রেহালের উপর কুরাআন শরিফ রেখে পড়া যাবে কিনা? এবং কুরাআন-সুন্নাহ আলোকে উক্ত পদ্ধতিটি কেমন হয়? অনুগ্রহপূর্বক উপরোল্লিখিত বিষয়টি কুরআন সুন্নাহর দলিলের আলোকে জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

মূলত প্ৰশ্নে বৰ্নিত বিষয়টি পবিত্র কালামে পাকের আদবের সাথে সম্প্রিক্ত, এ অবস্থাতে হাফেজ সাহেবদের জন্য এ ধরনের আসনে বসে ছাত্ৰদের পড়া শোনা কোন দোষনীয় নয়, এই ভাবে বসে পড়া শুনতে পারবে, তাতে কোন সমস্যা হবেনা।

সুত্রসমূহ

الدر المختار: (ولہا آداب) ترکہ لا یوجب إساء ة ولا عتابا کترک سنة الزوائد، لکن فعلہ أفضل

آپ کے مسائل اور ان کا حل: 4/446 نچلی منزل میں قرآن کریم کے ہونے کا کوئی حرج نہیں۔

الفتاوي الهندية: واذا حمل المصحف او شيءامن كتب الشريعة علي دابة في جوالق وركب صاحب الجوالق علب الجوالق لا يكره

امداد الاحكام: 1/233

و الله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

মানুষকে অন্য কোনো চতুষ্পদ প্রাণীর সাথে তুলনা করা কেমন?

ফতওয়া কোডঃ 182-আআ-09-07-1444

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম, আমার প্রশ্ন হলো, কোনো মানুষকে অন্য কোনো চতুষ্পদ প্রাণীর সাথে তুলনা করা কি জায়েজ?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

কোন মানুষ কে অন্য কোন চতুষ্পদ জন্তুর সাথে তুলনা করা কয়েক ভাবে হতে পারে;

১. কোন প্রাণীর সাথে তুলনা করার দ্বারা যদি ব্যাক্তির গুনকীর্তণ, প্রশংসা, উৎসাহ উদ্দীপনা ইত্যাদি উদ্দেশ্য হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই, তা একাধিক হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

২. প্রাণীর সাথে তুলনা করার দ্বারা যদি কাউকে গালি দেয়া, কষ্ট দেয়া, হেয় প্রতিপন্ন করা, ভর্ৎসনা, ব্যঙ্গ , উপহাস, বা অন্য কোন খারাপ উদ্দেশ্য হয়, তাহলে জায়েজ নেই।

সুত্রসমূহ

سورة الأعراف: 175-176 وَاتلُ نَبَأَ الَّذِي آتَيْنَاهُ آيَاتِنَا فَانْسَلَخَ مِنْهَا فَأَتْبَعَهُ الشَّيْطَانُ فَكَانَ مِنَ الْغَاوِينَ * وَلَوْ شِئْنَا لَرَفَعْنَاهُ بِهَا وَلَكِنَّهُ أَخْلَدَ إِلَى الْأَرْضِ وَاتَّبَعَ هَوَاهُ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ الْكَلْبِ إِنْ تَحْمِلْ عَلَيْهِ يَلْهَثْ أَوْ تَتْرُكْهُ يَلْهَثْ ذَلِكَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا فَاقْصُصِ الْقَصَصَ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ

سورة الجمعة: 5 مَثَلُ الَّذِينَ حُمِّلُوا التَّوْرَاةَ ثُمَّ لَمْ يَحْمِلُوهَا كَمَثَلِ الْحِمَارِ يَحْمِلُ أَسْفَارًا بِئْسَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِ اللَّهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ

سورة الحجرات: 11 يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَى أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

رواه البخاري و مسلم: 48+64 سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ

مصنف ابن أبي شيبة: 5/282 قال سعيد بن المسيب رحمه الله: ” لا تقل لصاحبك يا حمار ، يا كلب ، يا خنزير ، فيقول لك يوم القيامة : أتراني خلقت كلبا أو حمارا أو خنزيرا ” انتهى

مصنف ابن أبي شيبة: 5/283 وقال إبراهيم النخعي رحمه الله : ” كانوا يقولون : إذا قال الرجل للرجل : يا حمار ، يا كلب ، يا خنزير ، قال الله له يوم القيامة : أتراني خلقت كلبا أو حمارا أو خنزيرا ” انتهى

مجمع الزوائد: 9/271 قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “أنَّ رسولَ اللهِ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم قال والَّذي نفسي بيدِه إنَّه لَمكتوبٌ عندَ اللهِ في السَّماءِ السَّابعةِ حمزةُ أسَدُ اللهِ وأسَدُ رسولِه”

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর স্থলে বিসমিহি তাআলা লেখা কি বৈধ?

ফতওয়া কোডঃ 176-আআ-12-02-1444

প্রশ্নঃ

কওমী আলেমরা তাদের বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন এবং বিভিন্ন জায়গায় শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর স্থলে বিসমিহি তাআলা লিখতেছেন। প্রথম বাক্যটির অর্থ হলোঃ আমি আল্লাহর নামে শুরু করছি যিনি পরম দাতা ও দয়ালু। আর ২য় বাক্যের অর্থ হলোঃ তার নামের সাথে শুরু করছি যিনি মহান। আরবি গ্রামার অনুযায়ী যিনি মহান বলতে যে কারোর দিকে ইংগিত করা যায়। সুতরাং সেটা কি করে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম এর বিকল্প হতে পারে?

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

চিঠি-পত্ৰ ও গুরুত্ত্বপুৰ্ন লিখনীর শুরুতে পুরো বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখা সুন্নত, আল্লাহর রসুল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আমল দ্ধারা এটি প্ৰমানিত, পবিত্র কুরআন শরীফে হযরত সুলাইমান আঃ এর চিঠির আলোচনা এসেছে, যাতে বিসমিল্লাহ দ্ধারা শুরু করার কথা উল্লেখ আছে।

সহীহ হাদীসে এসেছে, হযরত মিস‌ওয়ার ইবনে মাখরাসা রা. ও হযরত মারওয়ান ইবনে হাকাম রা. থেকে বৰ্নিতঃ হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় হযরত রসুল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সন্ধিপত্ৰের শুরুতে মুশরিকদের মুখপাত্ৰ সুহাইল ইবনে আমর আপত্তি করে বললোঃ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম কি? আমরা তা জানিনা, আরবের প্ৰথা অনুযায়ী বিসমীকাল্লাহুম্মা লেখো। তদূত্তরে সাহাবায়ে কিরাম রা. বললেনঃ আল্লাহর শপথ আমরা বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম ছাড়া সন্ধিপত্ৰ লিখবোনা। উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় শরহুল মুসলিমে বৰ্নিত আছে যে, পরবৰ্তিতে আল্লাহর রসুল সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর পরিবৰ্তে অন্য কিছু লিখেন।

সুতরাং চিঠি পত্ৰ ও গুরুত্ত্বপুৰ্ন লিখনীর শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখা সুন্নত, এবং এর পরিবৰ্তে অন্য কোন শব্দ লিখলে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখার সুন্নত আদায় হবেনা, বিসমিল্লাহ এর সাওয়াবও পাওয়া যাবেনা। আর বিসমিহি তাআলা লিখলে আল্লাহর নামে শুরু করার ফজিলত তো পাওয়া যাবে, কিন্তু বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখার সুন্নাত আদায় হবেনা।

প্ৰকাশ থাকে যে, লিফলেট-পোষ্টার, প্ৰচারপত্ৰ-ব্যানার এ ধরনের কাগজ যেগুলো সাধারনতো সংরক্ষন করা হয়না, সেসব কাগজে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লিখবেনা বরং আরম্ভ করার সময় মুখে বিসমিল্লাহ পাঠ করে নিলেই চলবে বা বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর পরিবৰ্তে বিসমিহি তাআলা লেখা যাবে।

কেননা যেকোন ভাবে যদি বিসমিল্লাহ লেখার পর এ আয়াতের সাথে বেআদবী হওয়ার সম্ভানা থাকে, তাহলে এমন স্থলে বিসমিল্লাহ লেখা জয়েয নেই। বরং যে কাগজগুলো সাধারনতো সংরক্ষন করা হয় না তাতে কোন ভাবেই বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখা যাবে না, তার পরিবৰ্তে এমন কিছু লিখবে যাতে পাঠকবৰ্গ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর প্ৰতি ইংগিত বুঝতে পারে, আর এ জন্যই কওমী আলেমরা তাদের বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন এবং বিভিন্ন জায়গায় শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর স্থলে বিসমিহি তাআলা লিখছেন।

আরবি গ্রামার অনুযায়ী বিসমিহীর হা দ্বারা একমাত্র আল্লাহ তাআলাই উদ্দেশ্য, কেননা এর পর তাআলা শব্দ স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, আর উক্ত শব্দ একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্যই পবিত্র কুরআনে কারীমে ব্যবহার হয়েছে।

সুত্রসমূহ

سورة النمل: 30  اِنَّهٗ مِنۡ سُلَیۡمٰنَ وَ اِنَّهٗ بِسۡمِ اللّٰهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ

سورة الۡمُؤۡمِنُوۡنَ: 16 فَتَعٰلَی اللّٰهُ الۡمَلِکُ الۡحَقُّ ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۚ رَبُّ الۡعَرۡشِ الۡکَرِیۡمِ

صحيح المسلم: 4736 كتاب الجهاد و السيار. باب الصلح الحديبية

شرح المسلم للنبوي: 3337 كتاب الجهاد و السيار. باب الصلح الحديبية

صحيح المسلم: 13/15

الدر المختار: 4/130

فتاوى الهندية: 5/323

فتاوى محمودية: 5/535

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

কওমী আলেমরা তাদের উস্তাদদেরকে আকাবির বলছেন, এটা কি ঠিক?

ফতওয়া কোডঃ 172-আআ-09-02-1444

প্রশ্নঃ

এক আলেম প্রশ্ন করেছেন “কওমী আলেমরা তাদের উস্তাদদেরকে আকাবির বলছেন। আরবিতে আকাবির শব্দটি আকবার শব্দের বহুবচন। আকবার শব্দের অর্থ হলো সবচেয়ে বড়। যা শুধুমাত্র মহান আল্লাহর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। আকাবির শব্দটি যেখানে কোন নবী, রাসুল এবং সাহাবিদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হলো না সেখানে কওমি আলেমরা তাদের উস্তাদদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করছেন কেন?” আমি এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাই!

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

মূলত اكبر শব্দটি الكبر থেকে اسم تفضيل এর সীগা (শব্দ)। যা আধিক্যতা বোঝায়। আর এই শব্দটি আল্লাহ তাআলার সত্ত্বাগত নাম বা গুন বাচক নাম হিসেবে গন্য করা হয়না। শরীয়ত কৰ্তৃক যে ধরনের নাম বা গুনবাচক শব্দ বান্দাদের জন্য রাখা নিষেধ অথবা একমাত্ৰ আল্লাহ তাআলার জন্য বিশেষিত হিসাবে গন্য করা হয়, যা বান্দাদের জন্য রাখা নিষেধ তার অন্তৰ্ভুক্তও নয়।

اكبر শব্দটি যেমন মহান আল্লাহ তাআলার ক্ষেত্ৰে ব্যবহার হয়, তদ্রুপ অন্য ক্ষেত্ৰেও ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমন বুখারী শরীফের এক হাদীসে রসুলুল্লাহ সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ الا اخبركم باكبر الكباءر,قالوا بلي يا رسول الله. উক্ত হাদীসে রসুলুল্লাহ সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম اكبر শব্দটি গুনাহ এর একটি প্ৰকার বুঝানোর জন্য ব্যবহার করেছেন। অনুরুপ ভাবে একটি মাসনুন দুআতে বৰ্নিত আছেঃ اللهم لا تجعل الدنيا اكبر همنا উক্ত দুআতে اكبر শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে هم. শব্দ এর সিফাত (গুণ) হিসাবে। তেমনি ভাবে ফিকহের কিতাবাদিতে হদস এৱ ক্ষেত্ৰেও اكبر শব্দটি ব্যবহার হয়ে থাকে যেমন حدث اكبر (বড় নাপাক)।

সুতরাং اكبر শব্দটি শুধুমাত্ৰ মহান আল্লাহ তাআলার জন্য খাস নয়, অন্য ক্ষেত্ৰেও ব্যবহার করা যাবে। আর اكبر শব্দের বহুবচন হলো আকাবির। সুতরাং বড় বড় আলেমদের ক্ষেত্ৰে তাদের মান-মৰ্যদা ও গুরুত্ব বুঝানোর জন্য আকাবির বলা কোন দোষনীয় কাজ নয়।

উল্লেখ্য যে, নবী-রসুলদের মর্যাদা অনেক উপরের হওয়ায় তাদের শানে আকাবির শব্দ ব্যবহারে প্রয়োজন নেই, তবে পুর্ববর্তী যোগ্যদের ও সাহাবায়ে কিরামগনের সম্মানে আকাবির শব্দের ব্যবহার হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।

সুত্রসমূহ

صحيح البخاري: 6273 قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ألا أخبركم بأكبر الكبائر . قالوا : بلى يا رسول الله ، قال الإشراك بالله ، وعقوق الوالدين ، وكان متكئا فجلس

السنن الترمذي: 3502 اللهمَّ اقسِمْ لنا مِنْ خشيَتِكَ ما تحولُ بِهِ بينَنَا وبينَ معاصيكَ ، ومِنْ طاعَتِكَ ما تُبَلِّغُنَا بِهِ جنتَكَ ، ومِنَ اليقينِ ما تُهَوِّنُ بِهِ علَيْنَا مصائِبَ الدُّنيا ، اللهمَّ متِّعْنَا بأسماعِنا ، وأبصارِنا ، وقوَّتِنا ما أحْيَيْتَنا ، واجعلْهُ الوارِثَ مِنَّا ، واجعَلْ ثَأْرَنا عَلَى مَنْ ظلَمَنا ، وانصرْنا عَلَى مَنْ عادَانا ، ولا تَجْعَلِ مُصِيبَتَنا في دينِنِا ، ولَا تَجْعَلْ الدنيا أكبرَ هَمِّنَا ، ولَا مَبْلَغَ عِلْمِنا ولَا تُسَلِّطْ عَلَيْنا مَنْ لَا يرْحَمُنا

المعجم الأوسط للطبراني: 8991 البَرَكةُ مع أكابِرِكم

صحيح ابن حبان: 559 البَرَكةُ مع أكابِرِكم

فتاویٰ شامی: 5/532 قال فی الدر ویستحب الترضی للصحابة والترحم للتابعین و من بعدہم من العلماء ․․․․․․․وکذا یجوز عکسہ

الهداية: مكمل

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

অবুঝ বাচ্চাদের মসজিদে না আনাই উত্তম!

ফতওয়া কোডঃ 125-আমামা,আআ-20-05-1443

প্রশ্নঃ

অবুঝ ছেলেদের নামাজের জন্য মসজিদে নিয়ে যাওয়া কেমন? আল্লামা আজহারীর বয়ান শুনলাম, তিনি নিয়ে যেতে গুরুত্ব দিয়েছেন। আবার হযরত হাসানাইন রা. নামাজের সময় রসুলুল্লাহ সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাধে উঠতেন, তাই এই বিষরটি বিস্তারিত আমি জানতে আগ্রহী।

সমাধানঃ

بسم اللہ الرحمن الرحیم

বাচ্চা ছেলেদের মসজিদে নামাজের জন্য নিয়ে আসা বা না নিয়ে আসা উভয় ব্যাপরে হাদিসে নির্দেশনা এসেছে। তবে নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী অবুঝ ও ছোট বাচ্চাদের মসজিদে না নিয়ে আসাই উত্তম। বরং প্রথমে তাদেরকে মসজিদের আদব ও শিষ্টাচার, নামাজের মাসাইল সমূহ হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া জরুরী। পাক-নাপাক এর মাসাইল সমূহ গুরুত্বের সাথে শিক্ষা দিয়ে যখন বাচ্চার দ্বারা মসজিদের আদবের খিলাফ কোন কাজ না হবে, বাচ্চার দ্বারা অন্য কোন মুসল্লির নামাজের ক্ষতি না হবে, তখন মসজিদে আনতে কোন সমস্যা নেই।

কোন আলেম কোন মাসআলা বর্ননা করলে পূর্ন ব্যাখ্যার সাথে বর্ননা করা অতিজরুরী, অন্যথায় সাধারন মুসলমানরা বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মিষ্টার আজহারী সাহেব কোন মুফতি নন, আমরা তাকে ভালভাবে কুরআন-হাদিস অধ্যায়ন করে মাসআলা-মাসাইল বর্ননা করার অনুরোধ করবো।

সুত্রসমূহ

سنن ابن ماجة: 1/247 عن واثلة بن الأسقع، أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «جنبوا مساجدكم صبيانكم، ومجانينكم، وشراءكم، وبيعكم، وخصوماتكم، ورفع أصواتكم، وإقامة حدودكم، وسل سيوفكم، واتخذوا على أبوابها المطاهر، وجمروها في الجمع

الدر المختار: 1/93 ویحرم إدخال صبیان ومجانین حیث غلب تنجیسهم وإلا فیکرہ قوله یحرم إلخ لما أخرجه المنذري مرفوعًا جَنّبُوا مساجدَکم صِبیَانَکم ومجانینَکم

فتوی الشامیة: 1/486 یحرم …الخ) لما أخرجه المنذري مرفوعاً: جنّبوا مساجد کم صبیانکم… الخ والمراد بالحرمة کراهة التحریم

فيض القدير: 3/351 (جنبوا مساجدنا) وفي رواية مساجدكم (صبيانكم) أراد به هنا ما يشمل الذكور والإناث (ومجانينكم) فيكره إدخالهما تنزيها إن أمن تنجيسهم للمسجد وتحريما إن لم يؤمن

نيل الأوطار: 2/144 (وعن أبي هريرة قال: «كنا نصلي مع النبي صلى الله عليه وسلم العشاء، فإذا سجد وثب الحسن والحسين على ظهره فإذا رفع رأسه أخذهما من خلفه أخذا رفيقا ووضعهما على الأرض، فإذا عاد عادا حتى قضى صلاته، ثم أقعد أحدهما على فخذيه، قال: فقمت إليه، فقلت: يا رسول الله أردهما فبرقت برقة، فقال لهما: الحقا بأمكما فمكث ضوؤها حتى دخلا» . رواه أحمد) . الحديث أخرجه أيضا ابن عساكر وفي إسناد أحمد كامل بن العلاء وفيه مقال معروف، وهو يدل على أن مثل هذا الفعل الذي وقع منه صلى الله عليه وسلم غير مفسد للصلاة.
وفيه التصريح بأن ذلك كان في الفريضة، وقد تقدم الكلام في شرح الحديث الذي قبل هذا.
وفيه جواز إدخال الصبيان المساجد. وقد أخرج الطبراني من حديث معاذ بن جبل قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «جنبوا مساجدكم صبيانكم وخصوماتكم وحدودكم وشراءكم وبيعكم وجمروها يوم جمعكم واجعلوا على أبوابها مطاهركم» ولكن الراوي له عن معاذ مكحول وهو لم يسمع منه، وأخرج ابن ماجه من حديث واثلة بن الأسقع أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «جنبوا مساجدكم صبيانكم ومجانينكم وشراءكم وبيعكم وخصوماتكم ورفع أصواتكم وإقامة حدودكم وسل سيوفكم واتخذوا على أبوابها المطاهر وجمروها في الجمع» وفي إسناده الحارث بن شهاب وهو ضعيف. وقد عارض هذين الحديثين الضعيفين حديث أمامة المتقدم وهو متفق عليه. وحديث الباب وحديث أنس أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «إني لأسمع بكاء الصبي وأنا في الصلاة فأخفف، مخافة أن تفتتن أمه» وهو متفق عليه فيجمع بين الأحاديث بحمل الأمر بالتجنيب على الندب كما قال العراقي في شرح الترمذي، أو بأنها تنزه المساجد عمن لا يؤمن حدثه فيها

فتاوی رحیمیة: (سوال  ۱۳۴) ہمارے  یہاں  بعض مصلی اپنے ساتھ چھوٹے بچوں  کو مسجد میں  لاتے ہیں  اور جماعت خانہ میں  بٹھاتے ہیں ، وہ بچے کبھی روتے ہیں ، کبھی شرارت کرتے ہیں  اور گاہے پیشاب بھی کردیتے ہیں ، ان کو کہا جاتا ہے کہ بچوں  کو اپنے ساتھ نہ لاؤ،  اس سے مسجد کی بے حرمتی ہوتی ہے، مگر وہ نہیں  مانتے، ان کی سمجھ میں  آجائے ایسا جواب تحریر فرمائیں ۔ بینواتوجرو ا! (الجواب)مسجد میں  چھوٹے بچوں  کو لانے کی اجازت نہیں  ، مسجد کاادب و احترام باقی نہ رہے گا اور لانے والے کو بھی اطمینانِ  قلب نہ رہے گا ،نماز میں  کھڑے ہوں  گے مگر خشوع وخضوع نہ ہوگا، بچوں  کی طرف دل لگارہے گا ،حضور صلی  اللہ علیہ وآلہ وسلم کا ارشاد ہے: “جنبوا مساجد کم صبیانکم و مجانینکم  …”الخ  اپنی مسجدوں  کوبچوں  اور پاگلوں  سے بچاؤ

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

কিবলার দিকে পা দিয়ে ঘুমানো মাকরূহ

ফতওয়া কোডঃ 103-আআ-19-04-1443

প্রশ্নঃ কিবলার দিকে পা দিয়ে ঘুমানো উচিত হবে কি?

উত্তর : بسم اللہ الرحمن الرحیم

ইচ্ছাকৃত ঘুমন্ত বা জাগ্রত অবস্থায় পবিত্র কা’বা শরীফ বা কিবলার দিকে পা দিয়ে ঘুমানো মাকরূহ, তবে অনিচ্ছায় হলে সমস্যা নেই।

সুত্রঃ সুরা হজ্জ্বঃ ৩২, ফাতাওয়া হিন্দিয়াঃ ৫/৩১৯, আল মুহিতুল বুরহানীঃ ৮/১০, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়াঃ ২৯/১৭৪

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

রশিদ বই, চাঁদা উত্তোলনের কুপন বা মাহফিল এর পোস্টারে “আল্লাহ” শব্দ ব্যবহার!

ফতওয়া কোডঃ 52-আআ-22-11-1442

প্রশ্নঃ মাদ্রাসার রশিদ বই, চাঁদা উত্তোলনের কুপন বা মাহফিল এর পোস্টারে “আল্লাহ” শব্দ ব্যবহারের বিধান কি?

উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم

যে জায়গায় “আল্লাহ” শব্দ ব্যবহার করলে এ শব্দের সাথে বেয়াদবির আশঙ্কা থাকে, এ সমস্ত জায়গায় “আল্লাহ” শব্দ ব্যবহার করা জায়েজ নেই, মাদ্রাসার রশিদ বই, চাঁদা উত্তোলনের কুপন বা মাহফিল এর পোস্টারে “আল্লাহ” শব্দ ব্যবহারে বেয়াদবি হয়ে যেতে পারে, তাই এ সমস্ত স্থানে “আল্লাহ” শব্দ ব্যবহার থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতাসহ বিরত থাকতে হবে ।

সুত্রঃ তাবয়িনুল হাকায়েকঃ ১/৫৮, মুসলিম শরীফঃ হাদিস নং ১৮৬৯, আদ্দুররুল মুখতারঃ ৪/১৩০, হিন্দিয়াঃ ৫/৩২৩, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়াঃ ৩/৫৩৫, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাতঃ ১২/৩৪৫

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

এক মুসলমান অন্য মুসলমানের কাছে দুআ চাইতে পারবে কি?

ফতওয়া কোডঃ 36-আআ-08-11-1442

প্রশ্নঃ অনেকেই বলে এক মুসলমান অন্য মুসলমানের কাছে দুআ চাইবে কেন? যে দুআ চাইবে তার আল্লাহ আর যার কাছে দুআ চাইবে তার আল্লাহ কি ভিন্ন? আমি জানতে চাই এক মুসলমান অন্য মুসলমানের কাছে দুআ চাইতে পারবে কিনা?

উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم

যারা এধরনের কথা বলে তারা সাধারনত মূর্খ, কুরআন-সুন্নাহের জ্ঞান তাদের নেই, এক মুসলমান অন্য মুসলমানের কাছে দুআ চাওয়ার বিষয়টি কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা সুস্পষ্ট, হযরত ইউসুফ আঃ এর ভাইয়েরা তাদের পিতার কাছে দুআ চেয়ে ছিলেন, হযরত ওমর রাঃ ওমরায় যাওয়ার সময় স্বয়ং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে দুআ চেয়েছেন, অতএব কোন মুসলমান অপর মুসলমানের কাছে দুআ চাইতে পারবে না এই কথা সঠিক নয় ও কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী।

সুত্রঃ সুরা ইউসুফঃ ৯৭-৯৮, তিরমিজী শরীফঃ ৫/৩৮

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

ছাত্রকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা বা বেত্রাঘাত করা কতটুকু শরীয়ত সম্মত?

ফতওয়া কোডঃ 35-আআ-08-11-1442

প্রশ্নঃ কোন ছাত্র যদি লেখাপড়া বা মাদ্রাসার কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে অবহেলা করে, তাহলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা বা বেত্রাঘাত করা কতটুকু শরীয়ত সম্মত?

উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم

প্রশ্নে লেখাপড়ায় অবহেলা করলে বুঝিয়ে কাজ নিতে হবে, এজন্য গালিগালাজ করা কোনভাবেই শরীয়ত সম্মত নয়, স্বাভাবিক বেত্রাঘাত দোষণীয় নয়, তবে ছাত্রের পিতা-মাতারা যেহেতু বর্তমানে বেত্রাঘাতের অনুমতি দেয় না, তাই নাবালেগ ছাত্রদেরকে বেত্রাঘাত করা যাবেনা, মাদ্রাসার/ব্যক্তিগত কাজ না করলে বা এক্ষেত্রে অবহেলা করলে কোনভাবেই গালি দেয়া বা বেত্রাঘাত করা শরীয়ত সম্মত নয়।

সুত্রঃ হেদায়াঃ ৪/১৩২, বাদাইয়ুস সানায়েঃ ৭/৬৩, রদ্দুল মুহতারঃ ৬/৪৩০, কেফায়াতুল মুফতিঃ ২/২০৩, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়াঃ ১৬/১০২

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading

গরু, ছাগল, কুকুর, শুয়োর, জানোয়ার, শয়তান ইত্যাদি বলে উস্তাদ ছাত্রকে গালি দিতে পারবে না

ফতওয়া কোডঃ 34-আআ-07-11-1442

প্রশ্নঃ গরু, ছাগল, কুকুর, শুয়োর, জানোয়ার, শয়তান ইত্যাদি বলে উস্তাদ ছাত্রকে গালি দেয়া বৈধ?

উত্তরঃ بسم الله الرحمن الرحيم

প্রশ্নে বর্ণনামতে উক্ত শব্দ দ্বারা উস্তাদ ছাত্রকে গালি দেয়া বৈধ নয়, এমন গালি দেয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

সুত্রঃ হেদায়াঃ ৪/১৩২, বাদাইয়ুস সানায়েঃ ৭/৬৩, দুররুল মুখতারঃ ৪/৬৯

والله اعلم بالصواب

দারুল ইফতা, রহমানিয়া মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশ।

Loading